করোনাভাইরাস মহামারী থমকে দিয়েছে জীবন ও নানা আয়োজন। তারপরও এরই মধ্যে সীমিত পরিসরে রোবট বিষয়ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করেছিল জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি। রোবট বিষয়ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলাটি বসেছিল মঙ্গলবার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের ৪র্থ তলায়, গাঙচিল মিলনায়তনে। জাদুঘরের নিচতলার গেটের সামনেই থাকা ব্যানার দর্শনার্থীদের মনে করিয়ে দিচ্ছিল মাস্ক পরে উপরে ওঠার কথা। মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল তৃতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের। বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিয়ে হাজির হয়েছিলেন অংশগ্রহণকারীরা। সব মিলিয়ে প্রকল্প উঠেছিল দশটি। খবর বিডিনিউজের।
এ রকমই এক প্রকল্প ছিল ‘অটোমেটেড পাবলিক বাস উইথ লিটার ক্লিনিং সিস্টেম’। ঠিক কীভাবে গাড়ি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামনে থাকা প্রতিবন্ধকতা বুঝতে পারে, সে অনুযায়ী গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, রাস্তায় পড়ে থাকা ময়লা পাইপের মাধ্যমে টেনে তুলে নিতে পারে এবং অ্যাপের মাধ্যমে কোনো স্পর্শ ছাড়াই যাত্রীদের বাসে উঠতে পারা, এ বিষয়গুলোই ওই প্রকল্পে উঠে এসেছিল। প্রকল্পটি তৈরি করেছেন ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাই স্কুলের শিক্ষার্থী আরেফিন আনোয়ার। তিনি বলেন, ছাদের উপর থাকা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে ও গাড়ির পেছনে থাকা ব্যাটারির সাহায্যে কোনো পরিবেশ দূষণ ছাড়াই চলতে পারবে পরিকল্পিত পাবলিক বাসটি।
এ প্রকল্পের পাশের টেবিলেই ছিল ‘গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টিং সিস্টেম উইথ অটোমেটিক কল অ্যালার্ট’। গ্যাস লিক হয়ে যে অগ্নি দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে, তা নিরসনে প্রযুক্তিগত সমাধান দেওয়ার চেষ্টা ছিল প্রকল্পটিতে। বাসায় না থাকলেও বাড়ির মালিককে ফোনে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে গ্যাস জমে থাকার ব্যাপারটি জানিয়ে দেবে প্রক্রিয়াটি-ব্যাখ্যা করেছেন কোনাবাড়ী, গাজীপুরের এমইএইচ আরিফ কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইশতিয়াক আহম্মেদ। গ্যাস বের করে দেওয়ার সমাধানও উঠে এসেছিল এ প্রকল্পে।
এভাবে একে একে দেখা মিলেছে আরএফআইডি অটোমেটিক টোল কালেকশন সিস্টেমের, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল আদায় করর্য করোনাকালে চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করা যাবে এমন হিউম্যানয়েড মেডিকেল রোবট, কৃষিকাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে এমন প্রকল্প ‘কমপ্লিট এগ্রিকালচারাল সলিউশন ফর ফার্মার্স’।
আরও ছিল সিগমা আ ফায়ার ফাইটিং রোবট, ফিউচারফাইড ট্রেইন, ট্রানসরোভার, ব্লাইন্ড গিয়ার ৪ প্রো, বাংলাদেশ রোবট ফোর্সের অগ্নিনির্বপক রোবট প্রকল্প ইত্যাদি। দেশের চলমান নানাবিধ সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা যে শিশু-কিশোরদের চোখ এড়ায় না, সেটিরই যেন স্বাক্ষ্য দিচ্ছিল প্রত্যেকটি প্রকল্প।