সারা দিন রোজা রেখে ইফতারির সময় এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত ক্লান্তি দূর করে শরীরে প্রশান্তি আনে। বাসাবাড়িতে ফ্রিজে বরফ জমিয়ে অনেকে শরবত বানিয়ে খান। এছাড়া যাদের বাসায় ফ্রিজ নেই কিংবা যারা বাইরে ইফতার করেন তাদের একমাত্র ভরসা বরফের টুকরা। এসব বরফ কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত সেই প্রশ্ন থাকলেও প্রতিদিন ইফতারের ঘণ্টাদেড়েক আগে থেকে বরফের টুকরা কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিভিন্ন শ্রেণী–পেশার মানুষ।
বোয়ালখালীর বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউসুফ নগরীর ব্যস্ততম জিইসি মোড় এলাকায় প্রথম রমজান থেকে বরফ বিক্রি করছেন। তিনি জানান, বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে বরফ বিক্রি শুরু করি। ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে থেকে বিক্রি বাড়ে। তবে বরফের দাম বেশি, তাই বেশি লাভ করতে পারছি না। ইফতারের পর অবিক্রিত থাকলে সেটি ফেলে দিতে হয়। চাইলেও তো বরফ সংরক্ষণ করতে পারি না। এখন প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি বড় বরফের টুকরা বিক্রি করছি। এতে সব মিলিয়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকছে। নিউ মার্কেট এলাকায় বরফ বিক্রি করছিলেন মধ্যবয়স্ক আবদুল গফুর। তিনি বলেন, আমি মূলত রিকশা চালাই। এক বন্ধুর পরামর্শে গত বছরের রমজান থেকে রিকশা চালানোর পাশাপাশি বিকালে বরফ বিক্রি করি। ক্রেতাদের চাহিদা মতো ১০ টাকার বরফও বিক্রি করছি। গড়ে আমার হাজার টাকা পর্যন্ত আয় হয়। এসব বরফ ফিশারিঘাট এলাকার বরফ কল থেকে কিনেন বলে জানান তিনি।
বরফ কিনতে আসা ইমরান হোসেন বলেন, রিয়াজউদ্দিন বাজারের একটি কাপড়ের দোকানে চাকরি করি। প্রতিদিন একসাথে পাঁচ–ছয়জন মিলে ইফতার করি। দোকানে তো আর ফ্রিজ নেই। তাই চাইলেও ঠান্ডা পানি খেতে পারি না। বরফ কিনে পানি ও শরবতে বরফ মিশিয়ে ইফতার করি। ইফতারিতে ঠান্ডা শরবত ও পানি খেতে ভালো লাগে।
চকবাজার এলাকায় একটি ভ্যানে তিনটি বড় বরফের টুকরা বিক্রি করছিলেন মোহাম্মদ আলী। তিনি জানান, বরফ কল থেকে প্রতিদিন একেকটি বরফের টুকরা ৩০০ টাকায় কিনি। হাতুড়ি দিয়ে টুকরা বিক্রি করি। বরফ বিক্রি হয় ঘণ্টাদেড়েক পর্যন্ত। এ সময় ৬০০–৭০০ টাকা মতো আয় হয়।
বরফ ক্রেতা আবু তারেক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে মেসে থাকি। বাইরে থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে সবাই মিলে একসাথে ইফতার করি। এখন যেহেতু গরম পড়ছে তাই ঠান্ডা পানি ও শরবত খাওয়ার জন্য বরফ কিনতে এসেছি। সবকিছুর দাম বাড়লেও একমাত্র বরফের দাম মনে হয় বাড়েনি।