রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা থেকে আমাশয় রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিলেন ফারুক খান (৩৯) নামের এক রোগী। গত ১৩ মে ভর্তি হওয়া এই রোগী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় দুদিনেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। পরে বুধবার হাসপাতাল ত্যাগের পূর্বে তাকে ছাড়পত্রের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে বাড়ি পাঠান চিকিৎসকবৃন্দ। শুধু তাকে নয়, একইভাবে এদিন সুস্থ হওয়া আরও ১১ রোগীকেও ছাড়পত্রের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে বাড়ি পাঠানো হয়।
চিকিৎসকরা জানান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে সদ্য সুস্থ হওয়া রোগীদের ছাড়পত্রের সঙ্গে ফুলেল শুভেচ্ছার মাধ্যমে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। এতে সুস্থতার সুখের পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও পেয়েছে এই হাসপাতালে সেবা নেওয়া রোগীরা। রোগীদের সরকারি হাসপাতালমুখী করতেই ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের এ ভিন্নধর্মী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. তৌহিদুল আলমের উদ্যোগে ব্যতিক্রমী এই কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। রোগীদের সরকারি হাসপাতালমুখী করতেই বাড়তি এই সেবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের ইনডোরে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়ে সদ্য সুস্থ হওয়া রোগী ও রোগীর স্বজনরা বসে আছেন হাসপাতালের হলরুমে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসব রোগীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ছাড়পত্র ও ফুলের তোড়া। ছাড়পত্র আর ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়ে হাসিমুখে রোগীরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন ভালোবাসায় অনেক রোগী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। হাসপাতালে সেবা নেওয়া তিন বছর বয়সী রোগী মো. আনাসের মা ফারিয়া আক্তার বলেন, পাতলা পায়খানাজনিত সমস্যা নিয়ে আনাসকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসক ও সেবিকাদের আন্তরিক চিকিৎসা ও পরিচর্যায় দুদিনের মধ্যেই সে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনাসকে ছাড়পত্রের সঙ্গে ফুল উপহার দিয়েছেন। এটি আগে কখনো দেখিনি, খুব ভালো লাগছে।
মো. নুরুন্নবী (৭০) নামে অন্য একজন বলেন, চিকিৎসক ও সেবিকাদের নিবিড় চিকিৎসায় ও যত্নে আমি আরোগ্য লাভ করেছি। আরোগ্য লাভের পর আমাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। এতে রোগীরা মানসিক শক্তি ফিরে পাচ্ছে এবং হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের প্রতি রোগীদের আস্থা বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. তৌহিদুল আলম বলেন, অনেকেই মনে করেন সরকারি হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায় না। এ ধরনের ভুল ধ্যানধারণা থেকে উপজেলাবাসীকে বের করে আনতে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিতে এ ধরনের নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আমরা চাই এই উপজেলার রোগীরা প্রাইভেট হাসপাতালে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিক। সেবা গ্রহীতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে একদল চিকিৎসক ও নার্স সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে।