রোকনুজ্জামান খান : সবার প্রিয় দাদাভাই

| মঙ্গলবার , ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

রোকনুজ্জামান খান (১৯২৫২০০০)। খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক, আলোকিত মানুষ, সাংবাদিক ও সংগঠক। ছেলেবুড়ো সবার কাছে যিনি দাদা ভাই নামেই পরিচিত। দৈনিক ইত্তেফাকের শিশুকিশোরদের উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। দাদা ভাই রোকনুজ্জামান খান ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ই এপ্রিল রাজবাড়ি জেলার পাংশায় মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মৌলভী মোখাইর উদ্দীন খান। মায়ের নাম রাহেলা খাতুন। তার পৈতিৃক বাড়ি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার ভবানীপুর গ্রামে। রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাই ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে কর্মজীবন শুরু করেন কলকাতার দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার মাধ্যমে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদিত ইত্তেহাদ পত্রিকার ‘মিতালী মজলিস’ নামক শিশু বিভাগের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে শিশু সওগাত পত্রিকায় দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক মিল্লাতের কিশোর দুনিয়া’র শিশু বিভাগের পরিচালক ছিলেন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় যোগ দিয়ে তরুণ সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং তিনি মৃত্যুর আগমূহুর্ত পর্যন্ত এই পত্রিকায় কাজ করেন। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় শিশুকিশোরদের উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক নিযুক্ত হন এবং আসর পরিচালকের নামকরণ করা হয় দাদাভাই। রোকনুজ্জামান নিজে অনেক কবিতা ও ছড়া লিখেছেন এবং শিশুদের লেখা সংশোধন ও সম্পাদনা করে পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থ হচ্ছে হাট্টিমাটিম (১৯৬২), খোকন খোকন ডাক পাড়ি, আজব হলেও গুজব নয় প্রভৃতি। তাঁর সম্পাদিত ঝিকিমিকি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিশুসংকলন। এসব রচনার মাধ্যমে তিনি কোমলমতি শিশুদের মনে নীতিজ্ঞান, দেশপ্রেম ও চারিত্রিক গুণাবলি জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। তিনি কচি ও কাঁচা (১৯৬৫) নামে একটি মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। রোকনুজ্জামানের অপর একটি বড় অবদান ‘কচিকাঁচার মেলা’ (১৯৫৬) নামে একটি শিশুসংগঠন প্রতিষ্ঠা। রোকনুজ্জামান খান সৃজনশীল ও সাংগঠনিক কর্মের পুরস্কারস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৪), একুশে পদক (১৯৯৮), জসিমউদ্দীন স্বর্ণপদক এবং রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ও রোটারি ফাউন্ডেশন ট্রাস্টির পল হ্যারিস ফেলো সম্মানে ভূষিত হন। ৩ রা ডিসেম্বর, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শিশু সংগঠনে অসামান্য অবদান রাখায় রোকনুজ্জামান খান ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে মরণোত্তর স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধনাগরিক হয়রানি বন্ধ করা হোক