রেলে যুক্ত হচ্ছে আরো ৭০ মিটার গেজ ইঞ্জিন

পরিবর্তন হচ্ছে বিজয় ও মেঘনার বগি

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ

নতুন বছরে রেলের যাত্রী সেবার মান আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রেল কর্তৃপক্ষের। রেলের বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন কোচ, নতুন ইঞ্জিন। ফলে বাড়বে ট্রেনের গতি। এছাড়া চালু হতে যাচ্ছে রাত্রিকালীন বিরতিহীন আরো দুটি আন্তঃনগর ট্রেন। এসবের কারণে বাড়বে যাত্রী সেবার মানও। সেই লক্ষ্যে এগুচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
২০২০-২০২১ সালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বহরে যুক্ত হয়েছে দেড়শটি মিটারগেজ কোচ। ২০২১ সালে এসেছে নতুন ৩০টি মিটারগেজ ইঞ্জিনও। এগুলোর পাশাপাশি রেলের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও ৭০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন)। এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে নতুন ইঞ্জিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ইতোপূর্বে এক সাথে এতগুলো ইঞ্জিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে আর কখনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকায় উচ্চ গতিসম্পন্ন এই মিটার গেজ ইঞ্জিনগুলো আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
নতুন বছরে যাত্রী সেবার মান আরো বাড়ানোর প্রস্ততির কথা জানিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনসার আলী আজাদীকে জানান, রেল হলো নিরাপদ বাহন। এটাকে আমরা নিরাপদ রাখতে চাই। বর্তমান সরকারের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে রেলের নিত্য-নতুন সেবার মান বাড়ছে। তারপরও নতুন বছরে আমাদের যাত্রী সাধারনের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা আছে। বিজয় এঙপ্রেস এবং মেঘনা এঙপ্রেসে বগি পরিবর্তন হবে। বর্তমান যে বগি নিয়ে এই দুটো ট্রেন চলছে-সেগুলো পাল্টিয়ে চায়না সাদা বগিতে চলছে। আগে বিজয় এঙপ্রেস চলবে। বিজয়কে আমরা আগে ট্রায়াল দিয়ে রেখেছি। এরপর মেঘনা এঙপ্রেসও চলবে আরো আধুনিক সেবা নিয়ে।
শীতকালে ট্রেন দুর্ঘটনা বেড়ে গেলেও এর থেকে নতুন বছরে উত্তেরনের কথা জানিয়েছেন আনসার আলী। তিনি আজাদীকে জানান, শীতকালে নানান কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এটা এড়ানোর জন্য এল এম, গার্ড, গেটকিপার এদেরকে আমরা অনেক বেশি সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছি। অতর্কিতভাবে আমরা চের্কিংয়ে যাচ্ছি। যাতে তারা দায়িত্ব অবহেলা করতে না পারে। বর্তমান সময়ে রেল সবচেয়ে নিরাপদ বাহনে পরিণত হয়েছে। ঠিক সময়ে প্রতিটি ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। এটা যাত্রী সেবার সবচেয়ে বড় একটি মাধ্যম। এটাকে আমরা ধরে রাখতে চাই। নতুন বছরে এই সেবার মান আরো বাড়বে।
রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে মিটার গেজ ইঞ্জিন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে মোট ১৫০টি ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বিকল ইঞ্জিনের সংখ্যা ৪৫টি। বিকল এসব ইঞ্জিনের মধ্যে ২৫টি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও পার্বতীপুর শপে (কারখানা) রয়েছে। অন্য ২০টি বিকল ইঞ্জিন শপে নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
এদিকে রেললাইনে যথাযথভাবে পাথর না থাকায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রুটে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটছে এবং ট্রেনের গতিবেগ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রতি বছরই গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলোতে পাথর বসানো এবং প্রতিদিন রেলপথগুলোতে পাথর ঠিক মতো আছে কিনা, লাইন ঠিক আছে তা দেখার জন্য লোকবল থাকলেও সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করার কারণেই প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এবার এই রেললাইনে যথাযথভাবে পাথর বসানোর জন্য এবং তদারকির জন্য সংসদীয় কমিটিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুমিল্লায় এক ঘণ্টা আটকা ছিল সোনার বাংলা এক্সপ্রেস
পরবর্তী নিবন্ধ৫৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাশ