রেললাইনে যেভাবে চলে এলো বন্যহাতি

মোহাম্মদ মারুফ, লোহাগাড়া | বৃহস্পতিবার , ২৪ জুলাই, ২০২৫ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

লোহাগাড়ায় চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ব্যারিয়ার না থাকা অংশ দিয়ে রেললাইনের উপর চলে আসে একটি বন্যহাতি। একই হাতি রেললাইন থেকে নেমে পেছনে গিয়ে ট্রেনের বগিতে ধাক্কা দেয়। ট্রেন চলে যাবার পরে হাতিটি আন্ডারপাসের র‌্যালিং ভেঙে পূর্বপাশে সংরক্ষিত বনের দিকে চলে যায়। এতে কেউ হতাহত না হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ট্রেনের বগি। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের রেঞ্জ কার্যালয়ের পাশে আন্ডারপাস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী সৈকত এক্সপ্রেস ঘটনাস্থলে পৌঁছলে রেললাইনের উপর বন্যহাতি দেখতে পান ট্রেনচালক। জরুরি ব্রেক চেপে ট্রেনটি থামানো হয়। ঘন ঘন হুইসেল দেয়ার পর বন্যহাতিটি রেললাইন থেকে নেমে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ট্রেনের মাঝখানের একটি বগিতে গিয়ে একাধিকবার ধাক্কা দেয় বন্যহাতিটি। ট্রেনের লোকোমাস্টার (ট্রেনচালক) ছিলেন আবদুল আউয়াল ও গার্ড (পরিচালক) ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, অভয়ারণ্য রেঞ্জ কার্যালয়ের ৫০০ মিটার উত্তরে রেললাইনের পশ্চিম পাশে ব্যারিয়ার নেই। হাতিটি ওই জায়গা দিয়ে রেললাইনে চলে আসে। রেললাইনের উভয় পাশে বিচরণ করার হাতির পায়ের চিহ্ন দেখা গেছে। ট্রেন যাত্রীদের শোরচিৎকারে বন্যহাতিটি রাগান্বিত হয়ে বাগিতে ধাক্কা দেয়। বাগিতে ধাক্কা দেয়ার স্থানের পাশে আন্ডারপাস আর উভয় পাশে ব্যারিয়ার ছিল। ফলে বন্যহাতিটি আন্ডারপাসের র‌্যালিং ভেঙে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে ওই স্থান দিয়ে পুনরায় বন্যহাতি রেললাইনে আসার আশংকা করা হচ্ছে।

ট্রেনচালক আবদুল আউয়াল গণমাধ্যমকে জানান, রাত ৮টায় সৈকত এক্সপ্রেস কক্সবাজার থেকে ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু ৫০ মিনিট বিলম্বে ছাড়া হয়। যাত্রী ছিলেন প্রায় ৫০০ জন। ওই এলাকায় ট্রেনের গতি ছিল ২০ কিলোমিটার। ট্রেন হারবাংলোহাগাড়া সেকশনের চুনতি অভয়ারণ্য এলাকায় পৌঁছলে রেললাইনের উপর একটি বন্যহাতি চোখে পড়ে। সাথে সাথে ট্রেন থামানোর জন্য ব্রেক চাপতে থাকেন। এক পর্যায়ে জরুরি ব্রেক চাপলে ট্রেন থেমে যায়। হাতি যেখানে অবস্থান করছিল, তার ঠিক আগে গিয়ে ট্রেন থামে। এরপর ঘন ঘন হুইসেল দিলে হাতি নিচে নেমে যায়। কিছুক্ষণ পর ট্রেনের গার্ড সাখাওয়াত হোসেন ফোনে জানান একটি হাতি ট্রেনের বগিতে ধাক্কা দিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেন চালিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। এই রেলপথে আগেও ট্রেনের ধাক্কায় হাতি মারা গিয়েছিল। আবার একই ধরনের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত কিছু হয়নি। পরবর্তী সময়ে আবার ঘটতে পারে। তাই এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, হাতির ক্ষতি না হয়, সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাইজভাণ্ডার দরবারের আওলাদ ডা. সৈয়দ দিদারুল মাইজভাণ্ডারীর ইন্তেকাল
পরবর্তী নিবন্ধবন্দর এলাকায় অসহনীয় যানজট ও অব্যবস্থাপনা সমাধানের দাবি