লোহাগাড়ার পশ্চিম আমিরাবাদে রাতের আঁধারে রেললাইনের পাশ থেকে কাটা হচ্ছে কৃষি জমির টপসয়েল। এতে জমির উর্বরতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি খেকোরা দিনে নীরব থাকলেও রাতে বেপরোয়াভাবে কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে বিক্রি করে।
জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে একটি সিন্ডিকেট উপজেলার সর্বত্র মাটি বিক্রির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব মাটি পরিবহনের ফলে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক নষ্ট হচ্ছে। রাস্তাঘাটে বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। সড়কে বাড়ছে ধুলোবালি। ফসলি জমির টপসয়েল ও টিলা কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন ধরে পশ্চিম আমিরাবাদ কৈয়ারকুল এলাকায় রেললাইনের পাশে তিন স্থান থেকে রাতের আঁধারে এক্সকেভেটর দিয়ে ফসলি জমির টপসয়েল কাটা হচ্ছে। মাটি খেকোরা এসব মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। কিছু জমির উপরিভাগ একেবারে কেটে নিয়েছে। আবার কিছু জমির অর্ধেকাংশ কাটা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়ীরা এক শ্রেণীর দালাল দিয়ে সাধারণ কৃষককে লোভে ফেলে ফসলি জমির মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছে। আর কৃষকরা লোভে পড়ে নগদ টাকার আশায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি করে দেন। ৮–১০ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে অনেক জমিই ডোবায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের অভিমত, প্রতিবছর শত একর ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যার কারণে দিন দিন আবাদী জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে।
আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হোছাইন মুহাম্মদ শারফু জানান, একটি কুচক্রি মহল রাতের আঁধারে এক্সকেভেটর দিয়ে প্রতিনিয়ত কৃষিজমির টপসয়েল কাটছে। মাটি খেকোরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। অবৈধভাবে মাটি কাটার কারণে কৃষি জমির পাশাপাশি শত শত মাটিবাহী ট্রাক চলাচল করার কারণে গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া এভাবে মাটি কাটতে থাকলে রেললাইনেরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইনামুল হাছান জানান, কৃষি জমির টপসয়েল ও টিলা কাটার দায়ের ইতোমধ্যে একাধিক জনকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে পশ্চিম আমিরাবাদের কৈয়ারকুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে কৃষিজমির টপসয়েল কাটায় জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।