ধস নামানো বিজয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নগরপিতার আসন লাভ করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল বুধবার গভীর রাতে ফল ঘোষণা করা হয়। এতে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন রেজাউল। তার বিজয়ের পর আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে গা ভাসিয়েছেন। খুশিতে তারা একে অপরকে বলেন, ‘রেজাউল অইগেইয়ে।’ তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাত প্রার্থী। তবে এদের মধ্যে শুরু থেকে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির শাহাদাত হোসেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত তিন সপ্তাহ ধরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলে।
গতকাল ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৯টায়। দুই প্রধান প্রার্থী সকালে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নিজের ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী জনগণের ওপর আস্থা রাখতে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন। আর বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘণ্টায় ঘণ্টায় দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগের সাথে নয়, রাষ্ট্রযন্ত্রের সাথে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেন তিনি।
বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে গতকাল দিনভর ভোটগ্রহণ হয়েছে। ভোটের বলি হয়েছেন দুজন। আহত হয়েছেন প্রায় ১শ মানুষ।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে স্থাপিত ফল ঘোষণার প্রধান কেন্দ্র থেকে গত রাতে ফল ঘোষণা করা হয়। এতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী মোট ৩,৬৯,২৪৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ৫২,৪৮৯ ভোট।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম (হাতপাখা) নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে গতকাল সকালে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪, ৯৮০ ভোট। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর (আম) পেয়েছেন ৪,৬৫৩ ভোট। নির্বাচনে অপর প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মাওলানা এম এ মতিন (মোমবাতি) পেয়েছেন ২,১২৬ ভোট। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ (চেয়ার) পেয়েছেন ১,১০৯ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী (হাতি) পেয়েছেন ৮৮৫ ভোট। তবে তিনি রেজাউল করিমের সমর্থনে আগেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, চসিক নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।