অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টমসে সদ্য সমাপ্ত ২০২৪–২০২৫ অর্থবছরে (জুলাই–জুন) রেকর্ড ৭৫ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। যদিও চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮০ হাজার ৪০২ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে অবশ্য রাজস্ব আদায় হয়নি।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে প্রতি বছরই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ থেকে পিছিয়ে থাকলেও সামগ্রিকভাবে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে; যা খুবই ইতিবাচক। মূলত কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার তৎপরতায় মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি কমে গেছে। এছাড়া আটককৃত পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কায়ন মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা করা হচ্ছে। এছাড়া আমদানি বাড়ার কারণেও রাজস্ব আদায় বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সদ্য সমাপ্ত অর্র্থবছরে আমরা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উত্তাল সময় পার করেছি। কারণ অর্থবছরের প্রথমে জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়। এরপর শুরু হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা। এছাড়া ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা চাপে পড়ে যান। তবে প্রবাসী আয় বাড়ার কারণে ডলারের সংকট তেমন একটা অনূভূত হয়নি। ব্যাংকে নিতপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খুলতে আগের মতো হিমশিম খেতে হয়নি। আবার চট্টগ্রাম কাস্টমসের কর্মকর্তাদের কড়া নজরদারির কারণে শুল্কফাঁকির হারও কমে যায়। সব মিলিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ছে কাস্টম হাউসে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কাস্টমসে গত ২০২০–২০২১ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ৫১ হাজার কোটি রাজস্ব আদায় হয়। পরের ২০২১–২০২২ অর্থবছরে আদায় হয় ৫৯ কোটি টাকা, ২০০২২–২০২৩ অর্থবছরে ৬১ হাজার ৪৬৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয় এবং ২০২৩–২০২৪ অর্থবছরে ৬৮ হাজার ৫৬২ কোটি ৭২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ–কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসে সমাপ্ত অর্থবছরে ৭৫ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস প্রতি বছরই রেকর্ড করছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর যেমন প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের যে হিসাবটা আমরা এখন দিয়েছি, সেটি প্রাথমিকভাবে দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের আদায়ের হিসাব এখনো সন্নিবেশিত করা হয়নি। সেটি যোগ হলে প্রায় মোট রাজস্ব আদায়ের সাথে আরো এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা বাড়তে পারে। এই হিসাব পেতে আমাদের আরো দুই সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।