বিশাল লক্ষ্য সামনে রেখে চেন্নাই টেস্টে বাংলাদেশের হার ছিল সময়ের ব্যাপার। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রিজে ছিলেন শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটার মেহেদি হাসান মিরাজ এবং অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। দুজনেই বিগ শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। এরপরে বাংলাদেশের জন্য খুব বড় কোনো প্রত্যাশা ছিল না। ২৩৪ রানে অলআউট হলো বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ২৮০ রানের সবচেয়ে বেশি ব্যবধানের হারের লজ্জা জুটল টাইগারদের।
শেষ উইকেট পেয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। ২৮০ রানের এই জয়ের পর খুব একটা উচ্ছ্বাস ছিল না ভারতীয় শিবিরে। যেন এটাই হওয়ার কথা ছিল। মূলত দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের ইনিংস ১৪৯ রানে শেষ হওয়ার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় চেন্নাই টেস্টের ভাগ্য। পরের দিনগুলোতে সেটারই পূর্ণতা এলো। রানের বিচারে ভারতের কাছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার ছিল ২০৮ রানে। চেন্নাইয়ে সেই লজ্জাটাও ঢাকতে পারেনি টাইগাররা। ১৫৮ রানে চার উইকেট থেকে শুরু বাংলাদেশের চতুর্থ দিন। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে একটি সেশনও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। টেস্টের শুরুতে বোলাররা আশার আলো দেখালেও পরের পুরো সময়ই ছিল হতাশার, বিশেষত ব্যাটিং। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে জিতে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। প্রথম ইনিংসে ৩৭৬ রানে অলআউট হয় স্বাগতিকরা। পরে বাংলাদেশ করতে পারে কেবল ১৪৯ রান। ফলো অন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৮৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের প্রথম ঘণ্টায় কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ। কিন্তু পানি পানের বিরতির পর চার বলের ভেতরই উইকেট হারায়, আক্রমণে এসে সাফল্য পান রবীচন্দ্রন অশ্বিন। নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে আগের দিনটা শেষ করা সাকিব আল হাসানের ব্যাটের ওপরের অংশে লেগে প্যাড ছুঁয়ে চলে যায় জয়সোয়ালের হাতে। আউট হওয়ার আগে ৫৬ বলে ৩ চারে ২৫ রান করেন সাকিব। সাত ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি পাচ্ছেন না তিনি। লিটনও এরপর ফিরে যান অল্পতে। তার ব্যাট ছুঁয়ে বল যায় স্লিপে দাঁড়ানো রোহিত শর্মার হাতে। ১০ বলে স্রেফ ১ রানই করতে পেরেছিলেন তিনি। ১০ বলে ৮ রান করা মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হন অশ্বিনের বলে। অশ্বিনকে উড়িয়ে খেলতে চেয়ে উইকেট হারান মিরাজ। পানি পানের বিরতির পর খেই হারানো বাংলাদেশের দিশা পাওয়ার আশা ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু তিনিও উইকেট হারানোর মিছিলে যোগ দেন। ৮২ রান করে জাদেজার বলে বুমরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট অধিনায়ক শান্ত। তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের জন্য হারটা ছিল স্রেফ সময়ের ব্যাপার মাত্র। ৪ উইকেটে ১৯৪ রান করা বাংলাদেশ যেতে পেরেছে ২৩৪ রান অবধি।
এরপর অনেকটা আত্মাহুতি দিয়েছেন মিরাজ ও শান্ত। ৮২ রান করার পর আগের দুজনের পথ ধরেছেন তাসকিন আহমেদও। বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটে–বলে ঠিকভাবে হয়নি। মোহাম্মদ সিরাজ নিলেন ক্যাচ। ২১ ওভারে ৮৮ রান দিয়ে একাই ৬ উইকেট নেন অশ্বিন। জাদেজা ৩ ও বুমরাহ পেয়েছেন ১ উইকেট।