তীব্র গরমের মাঝে ঘন ঘন বিদ্যুতের আসা-যাওয়াতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের এই ভেল্কিবাজিতে বিঘ্নিত হচ্ছে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের কাজ কর্ম। নষ্ট হচ্ছে ইলেকট্রোনিঙ যন্ত্রপাতি এবং শিল্পের আধুনিক মেশিনপত্র। বিঘ্ন ঘটছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অন লাইন ক্লাসের। পিডিবির দাবি, এখন কোন লোড শেডিং নেই, বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়ন কাজের কারণে শার্টডাউন দিতে হচ্ছে।
বর্তমানে চট্টগ্রামে ১১ শ মেগাওয়াট থেকে ১২ শ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চট্টগ্রামে সরকারি বেসরকারি মিলে ১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৪০৩ মেগাওয়াট (সূত্র-পিডিবি)। চট্টগ্রামের বিদ্যুতের চাহিদার প্রেক্ষিতে উন্নয়ন কাজ চলছে। চট্টগ্রামে ১৪ শ কোটি টাকার “বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ও সঞ্চালন লাইনের উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী দুলাল মাহমুদের মতে, এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালে। এ প্রকল্পের মোট ২৪টি সাব স্টেশন নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ রয়েছে। ইতিমধ্যে ১২ টি নতুন সাব স্টেশন ও ৮টি পুরাতন সাব স্টেশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ রয়েছে। এছাড়া সন্দ্বীপে রয়েছে ২টি এবং পার্বত্য জেলার ২টি । এসবের কাজ এখন প্রয় শেষ পর্যায়ে প্রকল্পটির পাশাপাশি “চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প-২” নামে ২৬ শ’ কোটি টাকার আরো একটি মেগাপ্রকল্পের কাজ চলছে। বিদ্যুৎ খাতের এ ছিল শুধুমাত্র চট্টগ্রামের হিসাব।
সারা বাংলাদেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়ন) সহ সর্বমোট ২৫,১৭১ মেগাওয়াট দেশে সর্ব্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ১৩,৭৯২ মেগাওয়াট (এটি ২৮ এপ্রিলের হিসাব)। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩১ সালের মধ্যে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে ৩৭ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট সংখ্যা ১৪৭টি। এ সময়ে বিদ্যুতের চাহিদার লক্ষ্যমাত্রা হলো ২৯ হাজার মেগাওয়াট। শিল্প মালিকেরা তাদের নিজস্ব প্রয়োজনে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা এবং নিরবচ্ছিন্ন মানসম্পন্ন বিদ্যুতের প্রয়োজন উৎপাদন করে সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ (যাকে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ বলা হয়ে থাকে) নতুন করে এ পর্যন্ত আরো ৮০০ শিল্প প্রতিষ্ঠানে ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার (সূত্র-বিদ্যুৎ বিভাগ)। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে নানা সমস্যার কারণে ঘোষিত ক্ষমতা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়না। তেমিন সঞ্চালন লাইনের ক্রটির কারণে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় না।
গত বছর সর্ব্বোচ্চ ১২ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। আই.ই.এফ প্রতিবেদন বলছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রেখে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। রিপোর্টে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক প্রভাবকে দায়ী করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো রেকর্ড পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও কেন লোড শেডিং? কেন বিদ্যুতের ভেল্কিবাজি? কেন নষ্ট হচ্ছে শিল্প কারখানার মেশিনপত্র? উদ্যোক্তারা এবং শিল্প মালিকেরা আস্থা আনতে পারছেন না দেশীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ওপর। আস্থা আনতে পারছেন না পিডিবির উপর। শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহে নিরবচ্ছিন্ন ও কোয়ালিটি বিদ্যুৎ অপরিহার্য। দেশে যথেষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও নিরবচ্ছিন্ন ও কোয়ালিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘন ঘন লোড শেডিং ও বিদ্যুৎ এর আসা যাওয়া এবং ভোল্টেজ উঠানামার কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ এর অব্যবস্থাপনা ও ক্ষতির হাত হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহ এবং শিল্প মালিকেরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জেনারেটর আমদানী করে ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে।
ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ সুদের বোঝা বহন করেও তারা শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে চায়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেলেই উৎপাদন স্বাভাবিক থাকবে মেশিনপত্র, যন্ত্রপাতি ভালো থাকবে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুৎ না পেয়ে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভাগ কোয়ালিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারলেও নিজস্ব উদ্যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে অর্থাৎ ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগ প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাস সংযোগে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ফলে দেশে শিল্প বিনিয়োগ ও অর্থনীতির চলমান অবস্থা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এসব প্রতিবন্ধকতার কারণ কি? এর উৎস খোঁজা প্রয়োজন। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, যারা দেশের অর্থনীতির প্রবাহের ধারাবাহিকতাকে বিনষ্ট করছে তারা কাদের এজেণ্ডা বাস্তবায়ন করছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে শিল্প বিপ্লবের জন্য দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও কিছু স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সরকারের কোন সংশ্লিষ্টতা ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ না থাকা সত্ত্বেও কেন এ প্রতিবন্ধকতা? জনমনে প্রশ্ন। বিনিয়োগকারীরা নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন মালামাল উৎপাদন করবে। এতে কর্তৃপক্ষের মাথা ব্যথার কারণ কি?
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর এ সময়ে দেশের উন্নয়নের জয়যাত্রার মাঝে সুযোগ সন্ধানীদের ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে নজরদারির মধ্যে রাখা প্রয়োজন। ঘাপটি মারা শত্রুরাও এক সময় ভীষণ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এদের কারণে দেশের চলমান অর্থনীতির উন্নয়নের অগ্রযাত্রা থমকে দাঁড়াবে।
আমাদের জানামতে শুধু চট্টগ্রামে ৫০টির অধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্যাপটিভ খাতে বিদ্যুতের জন্য আবেদন করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ছাড়া তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব নয়। উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং বর্তমানের আধুনিক মেশিনারীর জন্য কোয়ালিটি ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রয়োজন। যা বিদ্যুৎ বিভাগ সরবরাহ করতে পারছেনা। তারা সরবরাহও দিতে পারবেনা অথচ নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনেও বাধা দেবে। এটি কেমন কথা? চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গ্যাস সংযোগ পাওয়ার জন্য জামানতের টাকা পরিশোধ করেছেন। অনেকে জেনারেটর আমদানীর জন্য ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে আমদানীর ব্যবস্থা নিয়েছেন। অনেকে আবেদন করে বসে আছেন। অনুমোদনের অপেক্ষায়।
নিরবচ্ছিন্ন ও কোয়ালিটি বিদ্যুৎ পাওয়ার জন্য ক্যাপটিভ খাতে গ্যাস সংযোগের জন্য কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিঃ এর নিকট আবেদন করেও বর্তমানে গ্যাস সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। চট্টগ্রামের শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীদের একমাত্র সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ হতে সভাপতি মহোদয় সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহ এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ও কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়ে পত্র দিয়েছেন। যাতে আবেদনকারীদেরকে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাস সংযোগ প্রদান করা হয়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোন অগ্রগতি হয়নি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আধুনিক উন্নয়নশীল বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার প্রদান করেছেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সকল প্রকার সুবিধাদি তিনি প্রদান করেছেন। চট্টগ্রামকে আধুনিক শিল্পনগরী ও বাণিজ্য নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্বভার নিজে গ্রহণ করেছেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে বিশেষ করে উন্নয়নের অন্যতম অপরিহার্য অংশ গ্যাস সংযোগের বিষয়কে তিনি অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।
দেশে গ্যাস স্বল্পতার কারণে ২০০৯ এর ২৭ অক্টোবর হতে চট্টগ্রামে সকল প্রকার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়। স্বল্প পরিসরে কিছু সংযোগ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হলেও ২০১২ হতে চট্টগ্রামে সম্পূর্ণভাবে শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চট্টগ্রামের অর্থনীতি এক প্রকার ধ্বংস হয়ে যায়। চার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নষ্ট হয়ে ধ্বংস হয়ে পড়ে। শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগসম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার কারণে দেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম চেম্বার এবং শিল্প মালিক ও বিনিয়োগকারীদের পক্ষ হতে অনেক আবেদন নিবেদনের প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কর্তৃক ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস সংযোগের জন্য অনুমোদন প্রদান করে এবং চট্টগ্রামের জন্য চট্টগ্রামের শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার এলএনজি আমদানি ব্যবস্থা করে এবং গ্যাসের সংকট পূরণের ব্যবস্থা নেয়।
দীর্ঘ একযুগের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিঃ কর্তৃক গ্যাস সংযোগ না দেয়া এবং গ্যাস সংযোগ না পাওয়াতে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট এবং গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা প্রভৃতি কারণে চট্টগ্রামের বিনিয়োগকারী এবং শিল্পপ্রতিদের মাঝে এক প্রকার আস্থাহীনতা তৈরী হয়ে আসছে। যার কারণে এলএনজি সরবরাহ করার পর এবং উপদেষ্টা কমিটি কর্তৃক গ্যাস সংযোগের অনুমোদনের পরও শিল্প মালিকরা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারেননি।
শিল্প বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের এ আস্থাহীনতা দূর করার জন্য কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে জ্বালানী সেক্টরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন।
কর্মকর্তারা শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের আশ্বাস দেন। কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা ছাড়া গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এত আশ্বাসের পরও গ্রাহকরা এগিয়ে না আসায় মাননীয় জ্বালানী উপদেষ্টার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালনা পরিষদ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে ২৮/০২/২০১৮ তারিখে চেম্বার ভবনে মতবিনিময় সভা আহ্বান করেন। সে সময় মাননীয় উপদেষ্টা ও জ্বালানী সেক্টরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সকলে চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রদত্ত সুপারিশ সমূহের সাথে একমত পোষণ করে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতাবিহীন গ্যাস সরবরাহের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সকলকে শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হয় এবং গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করার আশ্বাস প্রদান করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক আশ্বাসে এবং মাননীয় উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রী সহ সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা পূর্ণ প্রতিশ্রুতিতে শিল্প মালিকেরা শিল্পে বিনিয়োগ করেন এবং দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শরীক হন। কিন্তু বর্তমানে আবারো সেই পুরানো আস্থার সংকটে আবারো গ্যাস সেক্টর। প্রতিটি ক্ষেত্রে গ্যাস সংযোগ দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের জন্য এলএনজি আমদানী করা হলেও চট্টগ্রামের শিল্প মালিকেরা এর সুফল পাচ্ছেন না। বিভিন্ন উপায়ে বিভিন্ন আইন কানুনের ফাঁকে চট্টগ্রামে শিল্প ও ক্যাপটিভ ও বাণিজ্য সংযোগ নিরোৎসাহিত করা হচ্ছে।
শিল্পসমূহ গ্যাস সংযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে বাধা কোথায় এবং শিল্প সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কী তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম চেম্বারের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠন করে এলএনজির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত এবং শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সংযোগ প্রদানের জন্য এখনি জরুরী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ সময়ে দেশে বিকাশমান শিল্প উন্নয়নের স্বার্থে বর্ণিত বিষয়গুলো গুরুত্ব অনুধাবন করে সমগ্র চট্টগ্রামকে শিল্পনগরী ঘোষণা করার সুপারিশ করছি। বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামকে শিল্পনগরী ঘোষণা করে উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার দাবি জানাচ্ছি। মনে রাখতে হবে চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন।
লেখক : প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, শিল্পশৈলী।