রূপপুর প্রকল্পে আবারও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে আবাসিক প্রকল্পে এবার অস্বাভাবিক বেশি দামে কেনা হচ্ছে আসবাবপত্র।
অভিযোগ উঠেছে, সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে অনিয়মের মাধ্যমে আসবাবপত্র কেনার কাজ দেওয়া হয়েছে এর চেয়ে বেশি দরদাতাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের কর্মকর্তাদের আবাসিক প্রকল্প গ্রিন সিটির দশটি ভবনে আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য চলতি বছরের ১৯ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সেখানে আসবাবপত্র প্রস্তুতকারী ছয়টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ না দিয়ে তার চেয়ে বেশি দরদাতার কাছ থেকে আসবাবপত্র কেনা হচ্ছে। এতে সরকারের ক্ষতি হবে প্রায় ১১ কোটি টাকা। বাংলানিউজ
জানা গেছে, সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল পারটেক্স ফার্নিচার। তারা ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ৪৭ হাজার টাকার দরপত্র জমা দেয়। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দর ছিল ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ ১২ হাজার টাকা এবং তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা হাতিল দর দিয়েছিল ৫৫ কোটি ৯০ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৯ টাকা।
এছাড়া দরপত্র জমা দিয়েছিল এস রহমান অ্যান্ড ব্রাদার্স, ব্রাদার্স ফার্নিচার লিমিটেড ও আকতার ফার্নিচার লিমিটেড।
নিয়ম অনুযায়ী সর্বনিম্ন দরদাতা পারটেক্স ফার্নিচার কাজ পাওয়ার কথা থাকলেও কাজ দেওয়া হয়েছে হাতিল ফার্নিচারকে।
পাবনা গণপূর্ত বিভাগের এই অনিয়মের কারণে সরকারের ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১১ কোটি টাকা।
সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে কেন তার চেয়ে বেশি দরদাতার কাছ থেকে আসবাবপত্র কেনা হচ্ছে জানতে চাইলে পাবনা গণপূর্ত বিভাগের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী ও টেন্ডার কমিটির চেয়ারপারসন এবং প্রকল্প পরিচালক আরিফুজ্জামান খন্দকার বলেন, “এই টেন্ডার নিয়ম মেনেই সম্পন্ন করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। ”
এরপর তিনি আর এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, “আসবাবপত্র ক্রয়ে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে একই প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য ১৬৯ কোটি টাকার কেনাকাটায় পদে পদে দুর্নীতি হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
সেখানে প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয় ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর প্রতিটি বালিশ আবাসিক ভবনের খাটে তোলার মজুরি দেখানো হয় ৭৬০ টাকা। কভারসহ কমফোর্টারের (লেপ বা কম্বলের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত) দাম ধরা হয় ১৬ হাজার ৮০০ টাকা।
৩০টি চাদর আনতে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি ট্রাক ভাড়া করা হয়। আর ভবনের নিচ থেকে খাট পর্যন্ত তুলতে প্রতিটি চাদরের জন্য মজুরি দেখানো হয় ৯৩১ টাকা।
এ দুর্নীতির ঘটনায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গ্রেপ্তান হন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমসহ ১৩ জন।