বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় ৪টি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রুমা থানায় ৩টি এবং থানচি থানায় ১টি মামলা করা হয়েছে। চারটি মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী জানান, রুমা–থানচিতে লুট–তাণ্ডবের ঘটনায় ৪টি মামলা করা হয়েছে। মামলাগুলোতে আসামি অজ্ঞাত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত মামলায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ৮টা থেকে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে থানচি বাজারে থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। কেএনএফের দুই শতাধিকের মতো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী থানচি বাজার ঘেরাও করে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে তাণ্ডব চালায়। থানচিতে তাণ্ডব চালানোর পর তারা থানচি–আলীকদম সড়কের ডিমপাহাড় এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে। ৩টি জিপ গাড়িতে করে সশস্ত্র সদস্যরা আলীকদমের পথে ছুটে যায়। কেএনএফ সন্ত্রাসীরা রাত আড়াইটা পর্যন্ত ডিমপাহাড় সড়কে অবস্থান করেছিল। খবর পেয়ে থানচি–আলীকদম সড়কের ২২ কিলোমিটার এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ঘটনায় থানচি বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দোকানপাট খুললেও লোকজনের উপস্থিতি কম। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় থানচিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
বিডিনিউজ জানায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন) সঞ্জয় সরকার গতকাল দুপুরে থানচি থানা পরিদর্শন করেছেন। থানচিতে গোলাগুলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেদিন সোয়া ৮টার দিকে টহলরত সদস্যরা দেখতে পায় যে, তিনটি গাড়িতে করে বেশ কিছু অস্ত্রধারী লোকজন তাদের দিকে লক্ষ্য করে ফায়ার করছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও ওপেন ফায়ার করে; তখন দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরবর্তীতে আমরা জেনেছি যে, তারা একটা সংগঠন। নিশ্চিত হয়েছি যে, তারা কুকি–চিনের সশস্ত্র সংগঠনের ব্যক্তি। তারা পুলিশের দিকে গুলি করেছিল, কিন্তু আমরা প্রতিরোধ করেছি।
পাশেই পুলিশের থানা এবং দুই পাশে দুটি বিজিবি ক্যাম্প ছিল। তারপরও এমন ঘটনা কীভাবে ঘটল, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় মামলা হবে। তদন্ত করলে, আরও লোকজনদের জিজ্ঞেস করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। কীভাবে কী হয়েছিল, তারা কোথা থেকে আসছিল, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল। প্রাথমিকভাবে এখনও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, তাদের আলটিমেটলি কী টার্গেট ছিল।
স্থানীয় অনেকে ঘরে তালা দিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। বিষয়টি নজরে এসেছে কিনা? এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সবাইকে দ্ব্যর্থহীভাবে বলতে চাই, রুমা, থানচি এবং আরও অন্যান্য উপজেলায় বলেন, এখনও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে, লোকজন ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যদিকে চলে যাবে। এলাকা ছাড়ার ঘটনা আমাদের নজরে আসেনি।