বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসী গোলাগুলিতে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন ফিরোজ নামে আরো একজন সেনা সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার রাতে সাড়ে দশটায় বান্দরবানের রুমা উপজেলার রুমা-রাঙামাটি সীমান্তবর্তী দুর্গম রাইক্ষ্যং পুকুরের পাশ্ববর্তী বতিপাড়া এলাকায় পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ পদাতিক সেনা রিজিয়নের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, জেলার রুমা উপজেলার রুমা-রাঙামাটি সীমান্তবর্তী দুর্গম রাইক্ষ্যং পুকুরের পাশ্ববর্তী বতিপাড়া এলাকায় পাহাড়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের অবস্থানের খবর পেয়ে আস্তানায় অভিযান চালায় রুমা জোনের সেনাবাহিনীর একটি দল। অভিযান টের পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ করলে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হয়েছেন সেনাবাহিনীর একজন সৈনিকও। আত্মরক্ষায় সেনা সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুঁড়লে জনসংহতি সমিতির মূল সংগঠনের ৩ জন সশস্ত্র সদস্যের মৃত্যু হয়। গোলাগুলির পর সন্ত্রাসীদের অন্য সদস্যরা জঙ্গলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গুলিবিদ্ধ ফিরোজ ও হতাহত অন্যদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে নিহত জনসংহতি সমিতির ৩ সন্ত্রাসীর নাম পাওয়া যায়নি।
এদিকে গতকাল সকালে ঘটনাস্থল থেকে ১টি এসএমজি, ৩টি দেশীয় বন্দুক, ৪ সেট সেনাবাহিনীর আদলে পোষাক, ২৮০ রাউন্ড গুলি, ৩টি গুলির ম্যাগজিন, চাঁদার রশীদসহ ৫২ হাজার টাকা ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এ দিকে ঘটনাস্থল আশপাশের এলাকাগুলোতে সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেনা রিজিয়নের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, পাহাড়ে জনসংহতি সমিতিসহ অনেকগুলো সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ অপরাধ নানা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে। সশস্ত্র সন্ত্রাসী দমন ও পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী আশপাশের এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম জানান, রুমা উপজেলার দুর্গমাঞ্চলের সেনাবাহিনী-সন্ত্রাসীর গোলাগুলিতে একজন সেনা অফিসারসহ ৪ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আগ্নেয়াস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পুলিশকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। অস্ত্রধারীরা জনসংহতি সমিতির সদস্য বলে খবর পেয়েছি।