রুমায় কেএনএ কমান্ডারসহ নিহত ২, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার

পাহাড়ে সেনা অভিযান

বান্দরবান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৪ জুলাই, ২০২৫ at ৪:৫০ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সহযোগী গ্রুপ কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধে কেএনএ কমান্ডারসহ ২ জন নিহত হয়েছে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে কেএনএ এর এক সদস্য আটক করা হয়েছে। আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রুমা সেনা জোনে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর রুমা জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল আলমগীর হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।

নিরাপত্তা বাহিনী জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নে পলি প্রাংসা ও মুয়ালপি পাড়ার মাঝামাঝি ১৬ কিলোমিটার দূরে তাইদং ঝিড়ি এলাকায় নাইতং পাহাড় এলাকায় সেনাবাহিনী অভিযান চালায়। এসময় সেনাবাহিনী গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্টি আস্তানায় পৌঁছলে কেএনএ এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় সেনাবাহিনী সঙ্গে কেএনএ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। বন্দুকযুদ্ধের পর সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল তল্লাশি করে কেএনএ পোশাক পরিহিত ২ জনের লাশ দেখতে পায়। তাদের একজন কেএনএ কমান্ডার ও অপরজন অস্ত্রধারী সদস্য। তবে নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। এসময় কেএনএ আস্তানা থেকে থেকে ৩টি এসএমজি অস্ত্র, ১টি রাইফেল, ৮টি ম্যাগজিন, কেএনএ আর্মির ইউনিফর্ম, বিপুল পরিমাণে অস্ত্রের গুলি, আগ্নেয়াস্ত্রের সরঞ্জাম, চাঁদার রশিদসহ সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর রুমা জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল আলমগীর হোসেন বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর ১৬ই, ৩৬ ও ৩৭ বীর বেঙ্গলের ইউনিটের নিরাপত্তার টিম। এই তিন বেঙ্গলের সাঁড়াশি অভিযানে কেএনএ কমান্ডারসহ দুজন নিহত ও তাদের আস্তানা ধ্বংসের পাশাপাশি তাদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযান শুধুমাত্র পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। যারা স্থানীয় নাগরিক আছেন তাদের প্রতি সেনাবাহিনীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি রয়েছে। তাদের জানমালে নিরাপত্তায় রক্ষার্থে সেনাবাহিনী বদ্ধপরিকর।

এদিকে ভবিষ্যতে পর্যটন শিল্পের কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, কেএনএ অস্ত্রধারীদের যেখানে অবস্থান রয়েছে, সেটি পর্যটন এরিয়া থেকে অনেকদূরে। তাই পর্যটন শিল্পে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশাব্যক্ত করেন। পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে যাওয়া ১২৬ বম জনগোষ্ঠীর পরিবার ইতিমধ্যে নিজগ্রামে ফিরে এসেছে, অন্যদেরও ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ফিরে আসা গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা এবং খাদ্য বাসস্থানের সহযোগীতায় প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪ জুলাই : সারা দেশে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক, উত্তাল সব বিশ্ববিদ্যালয়
পরবর্তী নিবন্ধলিংক রোড যেন ‘আতংকের রাস্তা’