রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ : কবি ও গীতিকার

| বুধবার , ২১ জুন, ২০২৩ at ৫:০৩ পূর্বাহ্ণ

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (১৯৫৬১৯৯১)। কবি ও গীতিকার। তার জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে অন্যতম ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’। এবং গান ‘ভালো আছি ভালো থেকো/আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’। তাঁকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর জন্ম ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর তার পিতার কর্মস্থল বরিশাল জেলায়। তার মূল বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মিঠেখালি গ্রামে। তার বাবার নাম ডা. শেখ ওয়ালিউল্লাহ ও মায়ের নাম শিরিয়া বেগম। ছোটবেলা থেকেই সাহিত্যের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল কবি রুদ্রর। যৌবনে রুদ্র ছিলেন প্রাণবন্ত এবং কিছুটা উচ্ছন্ন। সবসময় আড্ডা দিতে ভালোবাসতেন। তবে কবিতার ক্ষেত্রে তিনি অনেক মনোযোগী থাকতেন। তার এই অস্থির ভাব নিয়ে কবি শামসুল হক বলেছিলেন, ‘তার মধ্যে যে বাউণ্ডুলেপনা ছিল তা তাকে সুস্থির হতে দেয়নি’। ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুল থেকে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসি করেন। ছাত্র হিসেবে তিনি মেধাবী ছিলেন। ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি পাস করেন। অতঃপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে সম্মানসহ বিএ এবং ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে এমএ ডিগ্রি লাভ। তিনি ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা এবং জাতীয় কবিতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম সম্পাদক। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের পরের সবকটি সরকার বিরোধী ও স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবাদী কবি হিসেবে খ্যাত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, দেশাত্মবোধ, গণআন্দোলন, ধর্মনিরপেক্ষতা, ও অসাম্প্রদায়িকতা তার কবিতায় বলিষ্ঠভাবে উপস্থিত। এছাড়া স্বৈরতন্ত্র ও ধর্মের ধ্বজাধারীদের বিরুদ্ধে তার কণ্ঠ ছিল উচ্চকিত। কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠে যে ক’জন কবি কবিতাকে শ্রোতৃপ্রিয় করে তোলেন, তিনি তাদের অন্যতম। তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ৩৪ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধশতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ হচ্ছেউপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৬), ছোবল (১৯৮৬), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮), মৌলিক মুখোশ (১৯৯০) ছোটগল্প: সোনালি শিশির, নাট্যকাব্য: বিষ বিরিক্ষের বীজ, বড়গল্প: মনুষ্য জীবন। তিনি ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের ২১ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধসেবক আসে যায়; কাটে না আমাদের দুর্দশা