আয়ারল্যান্ড সফরের আগে সে দেশের কন্ডিশন নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে বাংলাদেশ ফিরছে সিরিজ জিতে। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে গেলেও সে ম্যাচে স্বাগতিকদের অবস্থা ছিল বেশ ভালো। তবে দ্বিতীয় ম্যচে তিনশর বেশি রান টপকে বাংলাদেশ তুলে নেয় দারুন এক জয়। সে ম্যাচেই সিরিজ হারের শংকা কেটে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ ম্যাচে এসে রোমাঞ্চকর এক জয় তুলে নিল বাংলাদেশ জিতে নিল সিরিজও। শেষ ম্যাচে টাইগারদের জয় ৪ রানের। আর তাতে ২–০ ব্যাবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে দুর্দান্তভাবে আইরিশদের হারানো বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের মাঠ গিয়েও নিজেদের দাপট অব্যাহত রাখল। গতকাল সাকিবকে একাদশের বাইরে রেখে রনি তালুকদার এবং মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে অভিষেক করিয়েছিল বাংলাদেশ।এ দুজন তাদের অভিষেক রাঙাতে না পরলেও অধিনায়ক তামিমের ব্যাটিং এর পর মোস্তাফিজুর রহমানের আগুন ঝরানো বোলিং বাংলাদেশকে পাইয়ে দেয় দারুন এক জয়ের পাশাপাশি সিরিজও। টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভাল হয়নি। তামিমের সাথে ইনিংস শুরু করতে নামেন অভিষিক্ত রনি তালুকদার। কিন্তু ১৪ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এরপর ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুর চাপ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছিলেন তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটিতে। ৪৪ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন তারা। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৩২ বলে ৭ টি চারের সাহায্যে ৩৫ রান করে আসেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শান্ত। এরপর তামিম ইকবাল আর লিটন দাস মিলে গড়েন ৭৬ বলে ৬০ রানের জুটি। এজুটি ভাঙে লিটনের আউটে। ৩৯ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় ৩৫ রান করেন লিটন। তাওহিদ হৃদয়ও পারেননি ইনিংস বড় করতে । ১৬ বলে ১৩ করে ডকরেলের বলে বোল্ড হন। ১৫৯ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরপর ফিরেন তামিম। ৯ ইনিংস পর হাফ সেঞ্চুরি করা তামিম ফিরেছেন ৮২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৬৯ রান করে।
১৮৬ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে আবার টানেন মুশফিকুর রহিম আর মেহেদি হাসান মিরাজ । তাদের ৭২ বলে ৭৫ রানের জুটি বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল বাংলাদেশকে। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরির কাছে এসে ফিরেন মুশফিক। ৫৪ বলে তিনটি করেন ৪৫। পরের ওভারেই ফিরেন মেহেদি মিরাজ, করেন ৩৯ বলে ৩৭। আর ৯ রান যোগ করতেই ২৭৪ রানে অল আউট হয় বাংলাদেশ। তখনো ৭ বল বাকি। আইরিশ পেসার মার্ক এডায়ার ৪০ রানে নিয়েছেন ৪টি উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নামা আয়ারল্যান্ড শুরুতেই স্টিফেন ডোহিনিকে হারায়। প্রথম আঘাত হানেন মোস্তাফিজ। দ্বিতীয় উইকেটে স্টার্লিং এবং বালবার্নি মিলে ১০৯ রান যোগ করেন। এজুটি ভাঙেন এবাদত হোসেন। তিনি ফেরান ৭৮ বলে ৫৩ রান করা বালবার্নিকে। ২০ রান পর স্টার্লিংকে ফেরান মিরাজ। এই ওপেনার করেন ৭৩ বলে ৬০ রান। চতুর্থ উইকেটে ট্যক্টর এবং টাকার মিলে যোগ করেন ৭৯ রান। এজুটি ভাঙেন শান্ত। শেষ ওভারে দরকার ১০ রান। হাসান মাহমুদ প্রথম বলে ফেরালেন ১০ বলে ২০ রান করা এডায়ারকে। দ্বিতীয় বলে এলো এক রান। তৃতীয় বলে ফেরালেন ম্যাকব্রাইনকে। চতুর্থ বলে এক রান। পঞ্চম বলে দুই রান নিলে শেষ বলে আয়ারল্যান্ডের জয়ের জন্য দরকার পড়ে ৬ রান। কিন্তু একরানের বেশি নিতে দিলেন না হাসান মাহমুদ। ফলে ৪ রানে অসাধারণ জয় তুলে নিয়ে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। মোস্তাফিজুর রহমান ৪৪ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে দলের জয়ে বড় ভুমিকা রাখেন।