রুডইয়ার্ড কিপলিং। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী একজন ইংরেজ লেখক, কবি এবং সাহিত্যিক। মূলত তার অসাধারণ শিশু সাহিত্যের জন্য সুখ্যাতি লাভ করেন। জোসেফ রুডইয়ার্ড কিপলিং ১৮৬৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম জোসেফ রুডইয়ার্ড কিপলিং। জীবনের শুরুর দিকের কিছু সময় ভারতে কাটান, যাকে তিনি পরবর্তী সময়ে উল্লেখ করেছেন ‘অনেকটা স্বর্গ’-এর মতো। তার আত্মজীবনী ‘সামথিং অভ মাইসেল্ফ ফর মাই ফ্রেন্ডস নোন অ্যান্ড আননোন’ তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। ভারতীয় গৃহপরিচারিকার কাছে বড় হওয়ায় তিনি প্রথমে হিন্দি ভাষাই শেখেন। তবে ১৮৭১ সালে তার বাবা-মা তাকে এবং তার বোন বিয়াট্রিসকে স্কুলে ভর্তি এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। ১৮৮২ সালে কিপলিং কলেজ থেকে বেরিয়ে আসেন। তবে তার কোনো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সামর্থ্য না থাকায় তিনি আবার বাবা-মায়ের কাছে ভারতে ফিরে আসেন। এখানে এসে সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করে লাহোরে সিভিল অ্যান্ড মিলিটারি গেজেট পত্রিকায় পাঁচ বছর সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৮৮৮ সালে তিনি এলাহাবাদে চলে আসেন এবং পাইওনিয়ার সংবাদপত্রে যোগ দেন। কিপলিংয়ের অন্যতম সেরা সৃষ্টি হলো ‘দ্য জাঙ্গল বুক’, যেখানে তিনি মুগলির রোমাঞ্চকর অভিযান দেখিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন, কীভাবে মুগলি ভারতের সিওনি পাহাড়ের নেকড়েদের আদরে বড়ো হয়ে ওঠে। অনেক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে এই কাহিনী নিয়ে, যেটি নিয়ে সর্বশেষ ২০১৬ সালে ডিজনি নির্মাণ করে। মূলত এই বই তার শিশুতোষ লেখনীর সুনামকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিল। তার অমর সৃষ্টিকর্মের মধ্যে রয়েছে শিশু সাহিত্য ‘দ্য জাঙ্গল বুক’, ‘জাস্ট টু স্টরিস’, ‘পাক অফ পুক্স হিল’, উপন্যাস কিম; কবিতা ম্যান্ডালে, গুঙ্গা ডিন ইত্যাদি। এছাড়াও ১৮৯৫ সালে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় কবিতা ইফ-রচনা করেন। ছোটগল্প রচনার আধুনিক শিল্প নির্দেশনার একজন অন্যতম উদ্ভাবক হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। তবে সব দিক দিয়ে তার শিশু সাহিত্যগুলোই সবচেয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এগুলোকে শিশু সাহিত্যের ইতিহাসে একেকটি অনন্য রচনা হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। তিনি ১৯০৭ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।