দেশের আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (রিহ্যাব) নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে ‘আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’। জাপান গার্ডেন সিটির এমডি ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন এ প্যানেল ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২৯টি পরিচালক পদের বিপরীতে জয় পেয়েছে ২৫টিতে। বাকি ৪টির পদের মধ্যে ‘জয় ধারা’ প্যানেল ৩টিতে এবং ‘ডেভেলপারস ফোরাম’ একটি পদে জয়লাভ করে। ভোট গণনা শেষে মঙ্গলবার রাতে এ ফল ঘোষণা করেন রিহ্যাব নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সুব্রত কুমার দে। খবর বিডিনিউজের।
এদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) এ ভোটগ্রহণ চলে। ৪৭৬ জন ভোটারের মধ্যে এবার ভোট দিয়েছেন ৪০৯ জন। সেই হিসাবে ভোট পড়েছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। ভোটের ফলে দেখা যায়, ঢাকার ২৬টি পরিচালক পদের বিপরীতে ৮৬ জন এবং চট্টগ্রামের তিনটি পরিচালক পদের বিপরীতে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ঢাকায় ২৬টি পরিচালক পদের ২৩টিতে জয় পেয়েছে ‘আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’। আর চট্টগ্রামে তিনটি পরিচালক পদের মধ্যে দুইটিতে জয় পেয়েছে তারা। নির্বাচনে সর্বোচ্চ ২৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ওয়াহিদুজ্জামান।
জয়ের পর মঙ্গলবার রাতে তিনি বলেন, এই জয়ে আমরা উল্লসিত, আনন্দিত। জয়–পরাজয় যাই হয়েছে, আমরা যারা জয়ী হয়েছি, পরাজিত হয়েছি– সকলেই রিহ্যাবের মেম্বার। আমরা সকলে মিলেই রিহ্যাবকে সামনের দিনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা রিহ্যাবের স্বার্থেই একসাথে কাজ করব।
নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘ডেভেলপারস ফোরাম’র নেতৃত্বে আছেন সেঞ্চুরি রিয়্যালটির চেয়ারম্যান এম জি আর নাসির মজুমদার, ‘জয় ধারা’ প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশনের এমডি ইন্তেখাবুল হামিদ। এর বাইরে বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম দুলালের নেতৃত্বে ‘নবজাগরণ’ প্যানেল ভোট করলেও জয়ের মুখ দেখেনি।
এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ১৬ বছর পর নির্বাচিত কমিটি পেল দেশের আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সমিতি রিহ্যাব। এ সংগঠনের সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮ সালে। সেই কমিটির মেয়াদপূর্তির পর পর্ষদ গঠিত হচ্ছিল সমঝোতার ভিত্তিতে। সর্বশেষ ২০২১ সালে সব প্রার্থীকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়, টানা চতুর্থবারের মত সভাপতি হন আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।
মঙ্গলবার যে ভোট হলো তা গত সেপ্টেম্বরেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনের কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলার কারণে তা স্থগিত হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে সংগঠনটির সব ব্যাংক হিসাবও স্থগিত হয়।
পরে গত নভেম্বরের শেষ দিকে রিহ্যাবের কমিটির বর্ধিত মেয়াদ স্থগিত করে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক পদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জান্নাতুল ফেরদৌস দায়িত্ব নেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সুব্রত কুমার দে’কে নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। বোর্ডের বাকি দুই সদস্য হলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নুসরাত আইরিন এবং মোহাম্মদ মশিউর রহমান। এরপর ৩ ডিসেম্বর নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা হয়। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৫ জানুয়ারি। প্রথমে ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও সেটি পালটে ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।