‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় জামায়াত’ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। খবর বাংলানিউজের।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, রুহুল কবির রিজভী জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের আত্মসাৎ দেখেছে জনগণ, কারা পায়ের রগ কাটে, তাদের চেনে জনগণ, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে একাত্তরের বিরোধিতাকারী জামায়াত।’ রিজভীর এ জাতীয় বক্তব্য বিগত কয়েক দশক ধরে প্রচার করা হচ্ছে। রগ কাটা, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার, ৭১ এর বিরোধিতা এ সব বক্তব্য জনগণ বহু আগেই প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে কী অর্জন করতে চান, তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়। জামায়াত রগ কাটা ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের রাজনীতি কখনো করেনি। তিনি জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা নয়।’ তার এ বক্তব্য চরম মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।
জামায়াত ‘ইসলাম’ নিয়ে রাজনীতি করে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করে জামায়াত। জামায়াতে ইসলামী কখনো মোনাফেকি করেনি। জামায়াত দেশের মানুষের অধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই করেছে।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত কখনো মোনাফেকির আশ্রয় নেয়নি। রিজভী অবশ্যই অবগত আছেন, ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জোটকে এড়িয়ে ভিন্নমতের লোকদের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে ঐক্য করা হয়েছিল তা কি জাতির সঙ্গে মোনাফেকি নয়? জনগণ এই রাজনৈতিক ছন্দপতনের ইতিহাস ভুলে যায়নি।
বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি বলেন, তিনি (রিজভী) ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় জামায়াত’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে জনগণ বিস্মিত। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে জামায়াতের প্রতি অভিযোগ তোলার আগে রিজভীর আত্ম–পর্যালোচনা করা উচিত। কারা দলীয় টিম নিয়ে ভারত সফর করে ভারতের সঙ্গে সখ্য গড়ার চেষ্টা করেছেন, তা জনগণ খুব ভালো করেই জানে।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ভারতের আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি নিয়েছে। আর এ কারণেই সম্ভবত রিজভীর গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও অপবাদ আরোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।