রিকাত খুনের তিন কারণ

ত্রিভুজ প্রেম কিশোর গ্যাং টিকটক আনোয়ারা থেকে দুই বন্ধু গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

ত্রিভুজ প্রেম, পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে ওঠা কিশোর গ্যাং এবং টিকটকের মাধ্যমে সেলিব্রিটি হওয়ার চেষ্টা- বাকলিয়ায় বন্ধুদের হাতে রিকাত খুনের ঘটনার নেপথ্য কারণ হিসেবে এ তিনটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গত সোমবার বন্ধুদের ছুরিকাঘাতে বাকলিয়ায় রাকিবুল ইসলাম রিকাত খুন হয়। এ ঘটনায় জড়িত রিকাতের দুই বন্ধু মো. গোলাম কাদের হৃদয় (১৯) ও মো. সাকিবকে (২১) আনোয়ারা উপজেলা থেকে গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা আজাদীকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত রাকিবুল ইসলামের (২০) বাসা নগরীর চান্দগাঁও থানার খাজা রোডের কমিশনার গলিতে। গ্রেপ্তারকৃত দু’জনের বাসাও রাকিবুলের একই এলাকায়।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন সহযোগী আরমান, আরজু, সানিফ এখনও পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এডিসি নোবেল চাকমা বলেন, রাকিবুল, হৃদয়, সাকিব, আরমান, আরজু, সানিফ, সাদ্দাম পরস্পর বন্ধু। তারা একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। বিভিন্ন ধরনের ভিডিও করে তাদের টিকটক ও ফেসবুক গ্রুপে প্রচার করতো তারা। ফেসবুক-টিকটকের মাধ্যমেই সাকিবের সঙ্গে এলাকার ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক হয়। তবে সমপ্রতি ওই মেয়ে সাকিবের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে রাকিবুলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। তা-ও ফেসবুকের মাধ্যমেই। সাকিব বার বার ম্যাসেঞ্জারে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতে থাকেন। বিষয়টি জানার পর তাদের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ৫-৭ দিন ধরে ঝগড়া চলছিল সাকিব ও রিকাতের মধ্যে।
সাকিব-হৃদয়সহ পাঁচজন মিলে রিকাতকে খুনের পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ী তাকে ডেকে নেওয়া হয় বাকলিয়ার বলিরহাট এলাকায়। সাকিব তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ঝগড়ার সূত্রপাত ঘটায়। ঝগড়ায় সাকিবের পক্ষে আরও চারজন যোগ দেয়। একপর্যায়ে হৃদয় কাঠ দিয়ে রিকাতের মাথায় আঘাত করে। সাকিব পিঠে ও পেটে ছুরিকাঘাত করে। এতে মৃত্যু হয় রিকাতের।
এ বিষয়ে বাকলিয়া থানার ওসি আব্দুর রহিম জানান, হত্যাকাণ্ডে হৃদয় ও সাকিবসহ পাঁচজন অংশ নিয়েছিল। ঘটনার পরপর হৃদয় ও সাকিব পালিয়ে আনোয়ারা উপজেলায় চলে যায়, যেখানে সাকিবের গ্রামের বাড়ি। সেখান থেকে তারা চন্দনাইশ উপজেলায় তাদের পূর্ব পরিচিত এক অটোরিকশা চালকের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে ছুরিটি রেখে পুনরায় আনোয়ারা চলে যায়। তিনি আরও বলেন, নিহত রিকাত যদিও মাদরাসায় পড়তো, কিন্তু এরা সবাই পরিবারের অবাধ্য বখাটে হিসেবে এলাকায় পরিচিত। এলাকায় মারামারি করতো তারা। গ্রেপ্তার সাকিবের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানায় মাদকের মামলা আছে। রাকিবুল খুনের ঘটনায় তার বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাকিব ও হৃদয়কে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআবারও হৃদয়ভাঙা হার
পরবর্তী নিবন্ধদু বিভাগেই মাঝখানে ম্যাচটা হাতছাড়া হয়ে গেছে