বাস কাউন্টার এলাকায় অস্ত্রসহ ঘুরে বেড়াতেন মো. রাজু প্রকাশ ক্যাডার রাজু। সুযোগ বুঝে ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা, মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে সটকে পড়তেন। যে অস্ত্র দিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিতেন সেটিসহ গ্রেপ্তার হয়ে তাকে কারাগারে যেতে হয়েছিল। উক্ত ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গতকাল রোববার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে রাজুকে অস্ত্র আইনের পৃথক দুটি ধারায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় উত্তেজিত হয়ে পড়েন কাঠগড়ায় থাকা রাজু। গালাগাল করাসহ বিচারকের দিকে জুতা ছুড়ে মারেন তিনি। যদিও তা বিচারকের আসন পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এরপর তাকে প্রথমে কোর্ট হাজতখানায়, পরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর নগরীর পাহাড়তলীর এ কে খান মোড়ের বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ অফিসের সামনে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ক্যাডার রাজুকে গ্রেপ্তার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ। এ সময় রাজুর কোমরে থাকা একটি দেশি একনলা বন্দুক ও পকেট থেকে কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাহাড়তলী থানার তৎকালীন এসআই সুফল কুমার দাশ বাদী হয়ে নিজ থানায় অস্ত্র আইনে রাজুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার ও এ কে খান বাস কাউন্টার এলাকায় অস্ত্রসহ ঘুরে বেড়াতেন ক্যাডার রাজু। যাত্রীদের গতিবিধি লক্ষ্য করে সুবিধামতো যাত্রী পেলে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি দিয়ে ভয় দেখাতেন এবং যাত্রীদের টাকা, মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়তেন।
আদালত সূত্র জানায়, অস্ত্র মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে গত বছরের ২০ জানুয়ারি রাজুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরই ধারাবাহিকতায় চার্জ গঠন করে বিচারক বিচার শুরুর আদেশ দিলে রাজুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হয় যুক্তিতর্ক, শুনানি। সর্বশেষ গতকাল চট্টগ্রামের ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনিরা উক্ত মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তাকে অস্ত্র আইনের পৃথক দুটি ধারায় যথাক্রমে ১০ বছর ও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন। এ সময় কাঠগড়ায় থাকা রাজু বিচারকের উদ্দেশে প্রথমে গালিগালাজ করেন, পরে জুতা ছুড়ে মারেন। তবে জুতা বিচারকের আসন পর্যন্ত পৌঁছায়নি। জুতাটি রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলীদের জন্য থাকা নির্ধারিত আসনের সামনে গিয়ে পড়ে।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ আজাদীকে বলেন, গ্রেপ্তারের পর থেকে রাজু কারাগারে ছিলেন। জুতাটি তার কোমরে ছিল। রায় ঘোষণার পর তিনি গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে কোমর থেকে জুতাটি বের করে ছুড়ে মারা হয়। পরে পুলিশ তাকে হাজতখানায় নিয়ে যায়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর রতন চক্রবর্তী আজাদীকে বলেন, রায় ঘোষণার সময় আমি অন্য কোর্টে ছিলাম। পরে জুতা ছুড়ে মারার ঘটনাটি জানতে পেরেছি। রাজু নামের ওই আসামি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন। তার মাথায় সমস্যা আছে মনে হয়।