ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণদণ্ডের রায়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষের গণআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পরওয়ার। খবর বিডিনিউজের।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই–অগাস্টের ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের যে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, আমাদের প্রায় ১৪০০ ছাত্র জনতার জীবন। প্রায় ৪০ হাজার ছাত্র–জনতা আহত হয়ে বেঁচে আছেন। তাদের আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক অবদানকে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। এটা বিচারের গুরুত্বপূর্ণ দিন, এই কারণে আমরা বলছি, দেশের ১৮ কোটি মানুষের যে গণআকাঙ্ক্ষা ছিল এই রায়, ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের আগে করে যাবেন, এটা আমাদের দাবি ছিল। সেটি পূরণ হয়েছে।
এদিকে বাসস জানায়, রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরওয়ার বলেন, এই রায় স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিয়েছে অভিযুক্তরা কতটা নির্মম, প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং জঘন্য অপরাধে জড়িত ছিলেন। পত্রিকা, অডিও–ভিজ্যুয়াল উপাদান এবং টেলিফোন আলাপসহ সকল প্রমাণ সরাসরি আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিচারকাজ পুরোপুরি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী পরিচালিত হয়েছে। পরওয়ার অভিযোগ করে বলেন, এর আগে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার হয়েছিল তা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করেনি। সেসব মামলায় সাজানো অভিযোগ, মনগড়া সাক্ষ্য, পক্ষপাতদুষ্ট বিচারক এবং পূর্বনির্ধারিত রায় ছিল। রায়ের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে পরওয়ার বলেন, এই বিচার বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বহুকাল ধরে প্রত্যাশিত ন্যায়বিচারের চাহিদা পূরণ করেছে; যা জাতীয় নির্বাচনের আগেও ছিল অগ্রাধিকারমূলক দাবি।
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দলের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতাকে আপিলে সুপ্রিম কোর্ট খালাস দেন, সংশ্লিষ্ট মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। পরওয়ার বলেন, আমরা যেসব নেতাকে হারিয়েছি, তাদের ফিরিয়ে আনতে না পারলেও আজকের রায় স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং পুরো জাতির জন্য একটি শিক্ষা।
পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান পরওয়ার। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশিরা যেন মানবিক ও সভ্য সমাজে বসবাস করতে পারে; এমন একটি আদর্শ বাংলাদেশ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে চাই।












