রাস্তায় বেড়েছে মানুষ

লকডাউনের ৫ম দিন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৮ জুলাই, ২০২১ at ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ

গার্মেন্টস বন্ধ থাকায় লকডাউনে নগরীতে প্রায় দেখা নেই যাত্রীবাহী বাসের। তবে প্রতিদিনই সড়কে বাড়ছে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও রিকশার সংখ্যা। গণপরিবহন কম থাকার সুযোগে প্যাডেল চালিত রিকশার চাহিদা বেশি। কঠোর লকডাউনের ৫ম দিনে নগরীতে বেড়েছে প্রাইভেট গাড়ি। ফুটপাতে বেড়েছে হকার, রাস্তায় জনসমাগমও বেড়েছে। বিকেল সোয়া চারটায় নগরীর আগ্রাবাদ মোড়ে দেখা গেছে অফিস ফেরত কিছু মানুষের জটলা। যাদের প্রাইভেট গাড়ি রয়েছে তারা ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই বাসায় ফিরতে পারছে। তবে যাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নেই, তাদের বিপত্তিতে পড়তে হয়েছে। সুযোগে রিকশা চালকরাও বেশি ভাড়া দাবি করছেন। আগ্রাবাদ এলাকায় কথা হয়, সিএন্ডএফ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আগ্রাবাদ মোড় থেকে আগে সিএনজি কিংবা বাসে করে কাস্টমস হাউজে যেতাম। এখন ৬০ টাকা ভাড়ায় রিকশা করে যেতে হচ্ছে।
আগ্রাবাদ মোড়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটি শিপিং কোম্পানিতে জব করি। সরকারি ঘোষণা থাকলেও আমাদের অফিস খোলা। আমার বাসা বহদ্দারহাট এলাকায়। ৪ টায় অফিস থেকে বেরিয়ে এখন গাড়ি পাচ্ছি না। রিকশা দেড়শ টাকা ভাড়া দাবি করছে। এখন আমরা দুইজন মিলে একটি রিকশা নিয়ে যাচ্ছি।’
করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কোরবানির আগে ঘোষণা দিয়ে ২৩ জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন পালন করা হচ্ছে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত এ লকডাউন চলবে। তবে প্রথম দুই দিন নগরীতে জনসমাগম কম থাকলেও রোববার থেকে ধীরে ধীরে রাস্তায় লোকজনের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বাড়ে বিভিন্ন যানবাহনও।
এদিকে লকডাউনের মধ্যেও মানুষ টিকা দিতে ছুটছে। পরিবারের বয়স্ক মানুষদেরও টিকা দেয়ার জন্য নেয়া হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। গতকাল দুপুর ১২টায় আন্দরকিল্লা থেকে বকশিবিট মোড় পর্যন্ত গাড়ির জ্যাম তৈরি হয়। রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও প্রাইভেট কারের কারণে সড়কটিতে যান চলাচলের গতি কমে আসে।
সরেজমিন নগরীর আন্দরকিল্লা, চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, ওয়াসা মোড়, লালখান বাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ, বারিকবিল্ডিং, কাস্টমস মোড়ে দেখা গেছে মোড়ে মোড়ে অসংখ্য রিকশার উপস্থিতি। বন্দর এলাকায় পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যানের সংখ্যা ছিল বেশি। আন্দরকিল্লা, কাজির দেউড়ি, দেওয়ান হাট, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, চকবাজার এলাকার সড়কে হকারদের উপস্থিতি ছিল অন্যদিনের চেয়ে বেশি।
তাছাড়া নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে অসংখ্য সিএনজি টেক্সিও দেখা গেছে। বেশিরভাগ সিএনজি টেক্সি ফ্রি যাত্রী পরিবহন, রোগী পরিবহনের স্টিকার লাগিয়ে চলাচল করছে। দুপুর ১২টায় জেনারেল হাসপাতালের সামনে কথা হয় টিকা নিতে আসা আনোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ‘পশ্চিম খুলশী থেকে আমার মাকে টিকা দিতে এসেছি। আসার সময় একটি সিএনজি করে এসেছি, দুইশ’ টাকা ভাড়া। এখন বাসায় ফেরার জন্য সিএনজি চাইছি, দুই ড্রাইভার আসা-যাওয়ার ভাড়া দাবি করছে। একজন বলছে ৫শ টাকা হলে যাবেন। গাড়ি দুটিতে রোগী পরিবহনের নামে কমিশনারের ছবি দিয়ে ব্যানার লাগানো আছে।’ সিএনজি টেক্সি চালক নাসির বলেন, পথিমধ্যে কোথাও দাঁড়িয়ে যাত্রী নেয়া যায় না। শুধু হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। রোগী কিংবা হাসপাতালের লোক থাকলে গন্তব্যে যাওয়া যায়। এজন্য ভাড়া একটু বেশি নিতে হয়।
এদিকে নগরীতে লকডাউন কার্যকর করতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের ১৮ জন, বিআরটিএর ২ জন, সিটি কর্পোরেশনের ১ জনসহ ২১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ২১৬ মামলায় ৮৬ হাজার ৪শ টাকা জরিমানা আদায় করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও মনিটরিং কার্যক্রমে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা করেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনা মোকাবেলায় আতঙ্কিত না হয়ে টিকা গ্রহণ করুন : সুজন
পরবর্তী নিবন্ধকরোনা রোগীর সেবার পরিধি বাড়লো সিআইএমসিএইচে