প্রশাসনের অভিযানে উচ্ছেদ, পরদিন পুনরায় তা আবার বেদখল। এভাবে ব্যবসায়ীদের দখল–বেদখলে বোয়ালখালী উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ কানুনগোপাড়া সড়কটি এখন একেবারই বিপর্যস্ত। এতে প্রতিনিয়ত সৃষ্ট যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে। যাতায়াতে বাড়ছে চরম ভোগান্তিতে। উপজেলাবাসীর যাতায়তের প্রধান মাধ্যম কানুনগোপাড়া সড়ক। সড়কটি প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রশস্ত ও অনুন্নত। সড়কের গোমদন্ডী ফুলতল থেকে কানুনগোপাড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫/৬ কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক বাঁক। এসব বাঁকের কারণে গাড়ি চালাতে বিপাকে পড়েন চালকরা। সড়কটির গোমদন্ডী ফুলতল থেকে বুড়ি পুকুরপাড় পর্যন্ত সদর এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার ফুটপাতসহ দুপাশের খালি জায়গায় অনেক আগেই দখলে নিয়ে স্থায়ী–অস্থায়ী স্থাপনা গড়ে তুলেছেন প্রভাবশালীরা। আবার কেউ–কেউ রাস্তার উপরেই ভ্যানে করে মালামাল বিকিকিনিতে ব্যস্ত। পেছনে শত–শত গাড়ির লাইন সেদিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
উপজেলা সদরের একটি কিন্ডারগার্টেনে বাচ্চাকে পৌঁছে দিতে আসা নাসিমা আকতার বলেন, কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা নেই। যে যেভাবে পারছে সড়কটি দখল করে নিয়েছে। ফলে প্রতিদিনই এভাবে যানজটে আটকা পরতে হয়। এতে কোমলমতি শিশুদের সময়মত ক্লাসে পৌঁছতে কষ্ট হয়।
অপরদিকে স্বজনকে নিয়ে উপজেলা হাসপাতালে আসা কধুরখীলের দিদারুল আলম বলেন, একটুখানী জায়গা ফাঁকা নেই যে হাঁটাচলা করবো। সব দখল হয়ে গেছে।
রাস্তার উপর ভ্যানে করে তরকারি বিক্রি করছিলেন এক যুবক। রাস্তার উপর মালামাল বিক্রির নিয়ম আছে কিনা জানাতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো এমনি বসি না, ভাড়া দিয়ে বসি। ভাড়া কে নেয়? এমন প্রশ্নে নীরব হয়ে যান তিনি।
এ ব্যাপরে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাস্মদ মামুন বলেন, জনবহুল এ উপজেলার ব্যস্ততম কানুনগোপাড়া সড়কটি সরু ও সর্পিল আকার। এর উপর ভাসমান হকার ও অবৈধ দখলদারের কারণে প্রায় প্রতিনিয়তই যানজট লাগে। এতে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়তে হয় সবাইকে। জনস্বার্থে আমরা মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ দখলদার ও ভাসমান হকারদের উচ্ছেদ করে থাকি। কিন্তু পরক্ষণে দেখি এরা আবার পুরানো কায়দায় বসে যায় সড়কে। আবার উচ্ছেদ হয় আবারো একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। তিনি বলেন, সড়কটি প্রশস্তকরণের জন্য একটি প্রস্তাব আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজ একটু আন্তরিক হলে কাজটি সহজেই হয়ে যাবে।
পৌর মেয়র মো. জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, এসব হকারগুলো এলাকার অত্যন্ত গরীব–দুঃখী মানুষ। আগে তারা কোর্ট ভবনের সামনের মাঠে অস্থায়ীভাবে বসে ব্যবসা করতো। নির্মাণ কাজের জন্য প্রশাসন সেখান থেকে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে হঠাৎ উচ্ছেদ করে দিলে বেকায়দায় পড়ে যান তারা। তাদের জন্য জায়গা খোঁজা হচ্ছে। সেখানে স্থায়ীভাবে বসার ব্যবস্থা করা গেলে সড়কের উপর আর বসার সুযোগ পাবে না তারা।