অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাসায়নিক পরীক্ষাগারে (ল্যাব) নমুনার স্তূপ দেখা দিয়েছে। গত প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে একজন সহকারী কেমিক্যাল এসিসট্যান্ট দিয়ে চলছে ল্যাবের কার্যক্রম। যন্ত্রপাতি ও জনবল সংকটের কারণে ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকেছে। বছরে ৬০–৭০ হাজার কোটি টাকা রাজস্বের যোগান দেয়া প্রতিষ্ঠানটিতে নেই পূর্ণাঙ্গ রাসায়নিক ল্যাব। আমদানি–রপ্তানি বাড়লেও ল্যাবে পণ্য পরীক্ষার সক্ষমতা ১ শতাংশও বাড়েনি।
আমদানি–রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশ পরীক্ষা বাইরের ল্যাবের ওপর নির্ভরশীল। পূর্ণাঙ্গ ল্যাব ও দক্ষ জনবল থাকলে কাজের গতি বৃদ্ধি পেতো। তাই এখন রাসায়নিক পরীক্ষকের অভাবে যে পরীক্ষা একদিনের হওয়ার কথা, সেটি এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগছে। আবার ক্ষেত্র বিশেষে আরো বেশি সময়ও লাগছে। আবার অনেক সময় নমুনা পরীক্ষায় জটের কারণে বন্দর থেকে নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছে না আমদানিকারকরা। এতে আমদানিকারকদের পোর্ট ডেমারেজ গুণতে হচ্ছে।
রাসায়নিক ল্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ল্যাবে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক নমুনা আসে। এই বিশাল পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া অনেক নমুনার পরীক্ষা আবার দ্রুত করে দিতে হয়। বর্তমানে যে অবস্থা এতে অন্তত ১০ জন রাসায়নিক পরীক্ষক দরকার। কারণ পণ্যের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়, আমদানিকারক ঘোষণা অনুযায়ী সঠিক পণ্য আমদানি করেছেন কিনা। অনেক সময় অনেক অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় উচ্চ শুল্কের পণ্য নিয়ে আসে। তাই পণ্যের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য রাসায়নিক পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানি রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের ল্যাবে সক্ষমতা একেবারেই সীমিত। এখানে ফলের ফরমালিন পরীক্ষা, কিছু কিছু কেমিক্যাল ও রেফ্রিজারেটর গ্যাস সিলিন্ডারের পরীক্ষা হচ্ছে। এর বাইরে প্রায় সব পরীক্ষা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। আমরা তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আবেদন জানাবো, যেন চট্টগ্রামের কাস্টমসের এই ল্যাবটি আধুনিকায়ন করে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়। এতে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচবে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ–কমিশনার সাইদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের নতুন ভবন তৈরি হবে। সেখানে অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ রাসায়নিক ল্যাব থাকবে। এখন আমরা বহির্ল্যাবে পাঠিয়ে পণ্যের পরীক্ষা সম্পন্ন করছি।