রাসমণি ঘাটে হাহাকার

৫০টি নৌকা সম্পূর্ণ, শতাধিক আংশিক নষ্ট

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২২ at ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ

সাগর থেকে আহরিত মাছ অবতরণ ও বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ নগরের কাট্টলী রাসমণি ঘাট। ইলিশ শিকারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। শত শত নৌকা নিয়ে সাগরে যাওয়ার জন্য এ ঘাটে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন মৎস্যজীবীরা। ২২ দিন পর মাছ ধরতে যাওয়ার সুযোগ ঘনিয়ে আসায় উৎসবের ছোঁয়া লাগে সেখানে। তবে সেই উৎসবে বেদনার আলপনা এঁকে দেয় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে রাসমণি ঘাটে নষ্ট হয়েছে প্রায় দেড়শ নৌকা। টাকার অংকে এ ক্ষতি কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে মাছ ধরার একটি নৌকা তৈরি করেন মাছ ব্যবসায়ী ইমরান। গত সোমবার রাতে সিত্রাংয়ের আঘাতে পুরোপুরি ভেঙে গেছে তার নৌকাটি। কাট্টলী রাসমণি ঘাটে ভাঙা নৌকার পাশে গতকাল সকালে মনমরা হয়ে বসেছিলেন। তিনি বলেন, নৌকা নির্মাণে ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত উপার্জন হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকার মতো। যেভাবে নৌকাটি অকেজো হয়েছে তা মেরামত করা কঠিন। অনেকটা নতুন করে নির্মাণ করার মতো খরচ হবে। এটা করার সামর্থ্য নেই। বলেই চোখ মোছেন তিনি। উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম হারিয়ে সামনের দিনগুলোতে কীভাবে চলবেন? তার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
শুধু ইমরান নন, সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে রাসমণি ঘাটে তার মতো শতাধিক মৎস্যজীবী রোজগারের একমাত্র মাধ্যম নৌকা হারিয়েছেন। এদের কেউ কেউ নৌকা নির্মাণের জন্য ঋণ নিয়েছেন। সামনের অনিশ্চয়তায় ঘোর অন্ধকার দেখছেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, রাসমণি ঘাটে ৫০টি নৌকা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। আরো শতাধিক নৌকা আংশিক নষ্ট হয়েছে। সেগুলো সারিয়ে তুলতে কয়েক লাখ টাকা লাগবে। নিজেদের সঞ্চয় নেই। তাই একমাত্র উপায় ঋণ। অথচ অতীতে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া ঋণ এখনো শোধ হয়নি। এ অবস্থায় নতুন করে ঋণ কে দেবেন? সে প্রশ্ন তাদের। ঋণ পেলেও শোধ করবেন কীভাবে, সে চিন্তাও আছে।
কাট্টলী রাসমণি ঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. হাসান সাংবাদিকদের বলেন, মালামাল ও বোট নষ্ট হয়েছে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে সবার। আমার নিজেরও প্রায় ১৩টা বোট আছে। এসব বোটের ২০-২৫ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিনামূল্যে ২২ কোটি টাকার জিন থেরাপি পেল শিশু
পরবর্তী নিবন্ধলণ্ডভণ্ড কক্সবাজার সৈকত