রাষ্ট্র সংস্কারকে আইনি ভিত্তি দিতে গণভোটের প্রস্তাব জামায়াতের

| সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ at ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত হলেই নির্বাচনে অযোগ্য হবেন, এমন বিধান রেখে আইন করার প্রস্তাবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি রাষ্ট্র সংস্কারকে আইনিভাবে বৈধতা দেওয়ার জন্য গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও বিচার বিভাগের জন্য আলাদা সচিবালয়, জনপ্রশাসনের জন্য স্থায়ী কমিশনের প্রস্তাব দিয়েছে জামায়াত। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে জামায়াতের সংলাপ শেষে আলোচনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তাহেরের নেতৃত্বে জামায়াতের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসেন সকাল ১০টায়। সন্ধ্যা ৬টায় সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন জামায়েতের নেতারা। জামায়েতের নায়েবে আমির বলেন, ‘সাধারণভাবে কোনো ব্যক্তি সাজাপ্রাপ্ত হলে নির্বাচনে অযোগ্য হন, এটা আগে থেকেই হয়ে আসছে। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রসিডিউর শুরু হলে, তাদের বিরুদ্ধে যদি চার্জশিট (অভিযোগপত্র) হয়ে যায়, তখন তারা আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। যদিও মামলা দিলেই একটা লোক অযোগ্য হবেন তা না, দোষী সাব্যস্ত হলে তখন হতে পারেন। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধ তো একটা ভিন্ন ধর্মী অপরাধ, এটা সাধারণ অপরাধ না। সুতরাং একটা বিশেষ সময়কে ভিত্তি করে, এই সমস্ত অপরাধে কারো বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়ে গেলে তারা নির্বাচনে আসতে পারবেন না। আমাদের প্রস্তাব ছিল শাস্তি পাইলে অযোগ্য ঘোষণা করা, কিন্তু ওনারা যেহেতু যুক্তি দিয়েছেন যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সাধারণ অপরাধের মত না। সাধারণ অপরাধ হলে দুই বছরের জন্য শাস্তি পেলে অযোগ্য হবেন।’ তাহের বলেন, ‘আমরা পরে এটা মেনে নিয়েছি। একটি বিশেষ সময়ে যে অপরাধ হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ, সেটার জন্য দুই বছরের সাজার শর্ত প্রযোজ্য হবে না। যদি বিচারপ্রক্রিয়ায় চার্জশিট হয়ে যায়, তখন নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হবে।’

জামায়াতে ইসলামী সংস্কারকে আইনগতভাবে বৈধ করার জন্য গণভোট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমরা গণভোট চাই, গণভোটের মাধ্যমে আমাদের জুলাই সনদ হোক, জাতীয় সনদ হোক এর বাইরেও যদি কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকে সেটাকে যুক্ত করে জামায়াতে ইসলামী গণভোট চায়। গণভোটের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে। গণভোট হচ্ছে সকল মানুষের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা। গণভোট আইনগত সিদ্ধ হবে, সামাজিক প্রভাব আছে, রাজনৈতিক প্রভাব আছে, রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের প্রভাব আছে। সুতরাং জামায়াত আইনগত ভিত্তির জন্য গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে।’

গণভোট কি জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে, না আগে চেয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘আমরা আবারও বসবো, তখন আলোচনায় বলতে পারবো।’

এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে নিজেদের দেওয়া প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে আমরা দুইটা প্রস্তাব দিয়েছি। একটা হচ্ছে সব শেষ বিদায় নেওয়া প্রধান বিচারপতি উনি হবে। আর একটা প্রস্তাব হলতত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের জন্য একটা সার্চ কমিটি হবে, সেই সার্চ কমিটি কীভাবে গঠন হবে সেই প্রস্তাব আমরা দিয়েছি। যিনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তিনি, বিরোধী দলের প্রধান যিনি সংসদে থাকবেন এবং দায়িত্বে থাকা প্রধান বিচারপতিএই তিনজন মিলে সার্চ কমিটি হবে। এই সার্চ কমিটির তিনজন প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব করবেন।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমুদ্রে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তদন্ত করছে জাতিসংঘ
পরবর্তী নিবন্ধদুই মামলায় চিন্ময় দাসকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি