বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে এবারও কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীতে ভাসলো নয়টি কল্প জাহাজ। বাঁশ, বেত, কাঠ, বেত ও রঙিন কাগজের ওপর অপূর্ব কারুকাজে তৈরি হয় এসব দৃষ্টিনন্দন জাহাজ। এসব জাহাজ ভাসানোকে ঘিরে নদীর দুই কূলে উৎসবের আনন্দে মেতেছে হাজারো নর-নারী। মূলত বৌদ্ধ ধর্মামাবলম্বীদের উৎসব হলেও সকল সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে উৎসব হয়ে ওঠে এক অসাম্প্রদায়িক মিলন মেলা। গতকাল সোমবার দুপুরে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীর চেরাংঘাটা ঘাটে আয়োজন করা হয় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবের। যেটি চলে রাত পর্যন্ত।
উৎসবে দেখা গেছে, পাঁচ-ছয়টি নৌকার উপর বসানো এক একটি কল্প ছুটছে নদীর এপার থেকে ওপারে। রঙ-বেরঙয়ের কাগজ, বাঁশ-কাঠের অর্পূব কারুকাজে তৈরি প্রতিটি জাহাজই নজর কাড়া। আকর্ষণীয় নির্মাণ শৈলী আর বৈচিত্র্যে ভরা প্রতিটি জাহাজই বেশ দৃষ্টিনন্দন। যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বানর, ময়ুর, সিংহসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। এছাড়াও রয়েছে বৌদ্ধ ঐতিহ্য জাদী বা চূড়া।
আয়োজকরা জানান, এবার হাইটুপি-শ্রীকূল, পূর্ব মেরংলোয়া, উত্তর মিঠাছড়ি, হাজারীকূল, দ্বীপ শ্রীকূল, পূর্ব রাজারকূলসহ নয়টি কল্প জাহাজ তৈরি করা হয়েছে।
উৎসবে আসা স্কুল শিক্ষক নিরুপমা বড়ুয়া বেবী বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা এ উৎসব উদযাপন করে আসছি। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হলেও প্রতিবছর এ উৎসব হয়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলন মেলা। স্কুলছাত্রী আদ্রিতা বড়ুয়া বলেন, প্রতিবছর আমরা বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসানোর আনন্দে মেতে ওঠি। এ যেন প্রাণের সম্মিলন। এখানে না এলে বোঝা যাবে না উৎসবের রূপ কেমন। সোমবার বিকালে উৎসবের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। কক্সবাজার-০৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে আশীর্বাদ মন্ত্র পাঠ করেন ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক অর্পন বড়ুয়া।