কক্সবাজারের রামু থেকে অপহরণের শিকার ৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩ জনকে টেকনাফ থেকে উদ্ধার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৫ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান (এপিবিএন ) ও র্যাব সদস্যরা। উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্ররা হলেন মো. কায়সার হামিদ, মিজানুর রহমান নয়ন ও জাহিদুল ইসলাম মামুন। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত অপর ছাত্র মিজানুর রহমানকে উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। যদিও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা হতে এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্নভাবে অপহৃত স্কুল ছাত্রদের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে বলে জানা গেছে। আটক রোহিঙ্গারা হচ্ছে টেকনাফের নয়াপড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ৮ ব্লকের নজির আহাম্মদের ছেলে নুর সালাম (৫০) ও তার মেয়ে রনজিনা বিবি (১৬), ২৬ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে জাহাঙ্গীর ও একই এলাকার মোহাম্মদ ইব্রাহিম, এবং মোচনিপাড়া গ্রামের আবুল কাদেরের ছেলে সাদ্দাম মিয়া।
কক্সবাজার র্যাব ১৫ জানায়, অপহৃত চার স্কুলছাত্রের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাবের উদ্ধার অভিযান চলাকালে অপহরণকারীদের নিকট হতে পালিয়ে আসা অপর দুই ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে এপিবিএন। দুই অপহরণকারী র্যাবের নিকট আটক রয়েছে। অপর একজন ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে।
এপিবিন ১৬ এর অধিনায়ক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের উদ্ধার অভিযানে নামার আগে আমরা তিন রোহিঙ্গাকে এই ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করি। পরে তাদের দেয়া তথ্যে পাহাড়ে যৌথ অভিযান শুরু করি। নয়াপাড়া এপিবিএন ক্যাম্পের কমান্ডার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রামুর পেচারদ্বীপের বাতিঘর নামে একটি কটেজের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় চার স্কুলছাত্রের। সেই সুবাদে গত মঙ্গলবার সকালে জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহিম চার ছাত্রকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে ওই চারজনের খোঁজ মিলছিল না। পরদিন দুপুরে স্বজনদের কাছে বিভিন্ন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছিল। মুক্তিপণ না দিলে তাদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহিম দুজনই বাতিঘর কটেজের বয় হিসেবে কর্মরত।