কক্সবাজারের রামুর খুনিয়াপালংয়ে অপহৃত চার স্কুলছাত্রের মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) টেকনাফ নয়াপাড়া-শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকা থেকে এপিবিএন (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) সদস্যরা দু’জন ও র্যাব সদস্যরা একজনকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া ছাত্ররা হলো রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পেঁচারদ্বীপের মংলাপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কায়সার, মিজানুর রহমান নয়ন ও জাহিদুল ইসলাম। এখনো উদ্ধার করা যায়নি মিজানুর রহমানকে। তবে তাকে উদ্ধারে ওই এলাকায় অভিযান চলমান রয়েছে।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টা হতে আজ ১০ ডিসেম্বর ভোররাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ১৬ এপিবিএন-এর আওতাধীন নয়াপাড়া এপিবিএন ক্যাম্পের কমান্ডার শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) ও জাদিমুরা এপিবিএন ক্যাম্পের কমান্ডার কামরুল হাসানের (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) নেতৃত্বে অফিসার-ফোর্স সহ অপহৃত ৪ জন ভিকটিম উদ্ধারে নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নয়াপাড়া হতে নুর সালাম(৫০), রনজন বিবি(১৩) ও সাদ্দাম মিয়া নামের তিন রোহিঙ্গাকে আটক করে এপিবিএন।
১৬ এপিবিএন-এর অধিনায়ক (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক তিনজন ছাত্র উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, কক্সবাজার র্যাব-১৫ মিডিয়া উইং এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়েছে, “কক্সবাজারের পেঁচার দ্বীপ হতে অপহৃত চার স্কুল ছাত্রের মধ্য হতে একজনকে উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-এর উদ্ধার অভিযান চলাকালে অপহরণকারীদের নিকট হতে পালিয়ে আসা অপর দুই ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে এপিবিএন।
দুই অপহরণকারী র্যাব-এর নিকট আটক। অপর একজন ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে। তবে স্থানীয়দের ধারণা উদ্ধার অভিযানে অপহরণকারীদের কবল থেকে মিজানুর রহমানও পালিয়ে এসেছে। তবে এখনো প্রশাসনের হাতে পৌঁছেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চার ছাত্রের মধ্যে জাহিদুল সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। বাকিরা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।
রামু থানায় করা জিডি সূত্রে জানা যায়, রামুর পেঁচার দ্বীপের বাতিঘর নামে একটি কটেজের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় ওই চার স্কুল ছাত্রের। সেই সুবাদে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহিম চার স্কুলছাত্রকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে নেওয়ার কথা বলে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান।
ইব্রাহিম ও জাহাঙ্গীর দু’জনই রোহিঙ্গা। সেখানে বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে ওই চারজনের খোঁজ মিলছিল না। পরদিন দুপুরে স্বজনদের কাছে বিভিন্ন অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছিল। মুক্তিপণ না দিলে তাদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে। তার সহযোগী মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বাড়িও সেখানে। তারা দু’জনই বাতিঘর কটেজের বয় হিসেবে কর্মরত।