রামুতে ১০ দিনের ব্যবধানে পুরো পাহাড় কেটে শেষ

শাহেদ মিজান, কক্সবাজার | শনিবার , ৩ মে, ২০২৫ at ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ

রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ার ঘোনা উত্তরটিরা পাড়া নামের এলাকায় একটি বিশাল পাহাড় কেটে ইটভাটায় মাটি মজুদের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় দুই বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ও তার ভাই দিদার মিয়া সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত এই পাহাড় কেটেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, পাহাড় কাটা এ মাটি পার্শ্ববর্তী লামার পাড়ার জামাল কোম্পানির ইটভাটায় মজুদ করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, সরকারি খাস খতিয়ানের ওই পাহাড় সিরাজ মিয়া ও তার ভাই দিদার মিয়ার দখলে ছিল। আনুমানিক ১৫ দিন আগে গণঅভ্যুত্থানের রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়ে পলাতক জামাল উদ্দীনের মালিকানাধীন স্কেভেটর লাগিয়ে পাহাড় কাটা শুরু হয়। রাতদিন টানা ১০ দিনের বেশি সময়ে পুরো পাহাড়টি কেটে সাবাড় করে ফেলা হয়। কাটা সব মাটি ১০টির বেশি ডাম্পারে করে জামাল কোম্পানির ইটভাটায় মজুদ করা হয়েছে। এই পাহাড় সাবাড় করা নিয়ে মানুষের মুখে আলোচনা ছড়িয়ে পড়লে অল্প স্থান অবশিষ্ট রেখে সপ্তাখানেক আগে কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়। পাহাড় কাটার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সেখানে রাতারাতি মুরগীর খামারের জন্য ঘর নির্মাণ করে সিরাজ মিয়া ও তার ভাই দিদার মিয়া।

পাহাড় কাটা বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সিরাজ মিয়া দাবি করেন, পাহাড়টি তাদের মালিকানাধীন। সরকারি খাস খতিয়ানের পাহাড় কিভাবে তার হয়এমন প্রশ্ন করা হলে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি। গণআন্দোলনের মামলায় পলাতক থাকায় পাহাড় কাটার আরো সহযোগী জামাল কোম্পানির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একইভাবে গণআন্দোলনের মামলার আসামি হয়ে পলাতক থাকায় স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলামের বক্তব্যও জানা যায়নি।

কাওয়ারখোপ ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম বলেন, অতিগোপনে পাহাড়টি কাটা হয়েছে। ঘটনা জানার পর অভিযুক্ত সিরাজ মিয়াকে পরিষদে ডেকে আনা হয়। তিনি নিজেকে পাহাড়টির মালিক বলে দাবি করেছেন, কিন্তু এটি খাস খতিয়ানভুক্ত। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় বনবিট কর্মকর্তা আবদুল কাদের বলেন, ওই এলাকা পাহাড়ি হলেও খাস খতিয়ানভুক্ত। এটিকে পুঁজি করে বিভিন্ন লোকজন পাহাড় ও বন দখল করে রেখেছে। সমানতালে পাহাড় কেটে ফেলছে। কিন্তু এখতিয়ার না থাকায় বনবিভাগ কিছু করতে পারে না। তবে এই পাহাড় কাটার বিষয়ে এসিল্যান্ডকে অবহিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামু উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ জাহিদ রাতুল বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি জেনে ইতিপূর্বে তহসিলদারের নেতৃত্বে একটি দল দুইবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কিন্তু পাহাড় কর্তনকারীরা আগে থেকে খবর পেয়ে পালিয়ে যায়। তাদের ব্যাপারে নিয়মিত মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে। এই সপ্তাহে পরিবেশ অধিদপ্তর সরেজমিন পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেপ্টেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ ও অপারেটর আসতে পারে
পরবর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ের ইউএনওর নামে ফেসবুকে ভুয়া আইডি, থানায় জিডি