কক্সবাজারের রামুতে কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬ হাজার পরিবার।
এছাড়া বন্যার পানি সড়কের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রামুর ঈদগাঁহ-ঈদগড় সড়ক, রামু-মরিচ্যা সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ফঁতেখারকুল, রাজারকুল ঈঁদগড়, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের অন্তত বিশটি গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন এখানকার মানুষ।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম জানান, এবারের বন্যায় গর্জনিয়া পাইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম পানিবন্দী অবস্থায় আছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে অবস্থার আরও অবনতি হতে পারে।
এদিকে, পার্শ্ববর্তী কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতার পাড়া, দোছড়ি, ডিককুল, জামছড়িসহ কয়েকটি গ্রামে বাঁকখালী নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান জানান, প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ইতিমধ্যেই বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
অফিসের চর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক খালেদ শহীদ জানান, রামু সদরের ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে ফজল আম্বিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে রামু-মরিচ্যা সড়কটি পানিতে বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে এই ইউনিয়নের অন্তত পাঁচশ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ আহাম্মদ ভূট্টো জানান, এলাকার লেইঙ্গাপাড়া ও চরপাড়া পানির নিচে বর্তমানে। তাছাড়া রামু-ঈঁদগড়ের পানের ছড়া ঢালায় মূল যোগাযোগ সড়ক প্রায় ভেঙে পড়েছে। এটি পুরোপুরি ভেঙে গেলে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণয় চাকমা জানান, উপজেলায় ১১ টি ইউনিয়নের পাঁচ থেতে ছয় হাজার পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা কিছু কিছু ইউনিয়নে ইতিমধ্যে চারটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্য ইউনিয়নেও বরাদ্দের প্রকৃয়া চলছে।
রামু-মরিচ্যা আরাকান সড়কের অফিসের চর মূল সড়ক ভাঙ্গন পরিদর্শনে এসে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, “রামুর বেশিরভাগ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্থদের রান্না করা খাবার বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।”
তিনি বলেন, “পানিতে রামু-মরিচ্যা সড়কের অফিসের চর অংশে বিধ্বস্থ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি পুনঃ সংস্কারের কাজ চালানো হবে।
পাশাপাশি পানি নেমে গেলে অন্যান্য এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কও মেরামত করা হবে।”