রামগড়ে বাড়িতে ঢুকে মা ও মেয়েকে জবাই করে হত্যা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২২ আগস্ট, ২০২৫ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ঘরের শয়ন কক্ষে মা ও মেয়েকে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতের কোনো এক সময় এ জোড়া খুনের ঘটনা সংঘটিত হয়। নিহতরা হচ্ছেন আমেনা বেগম (৯৫) ও তার মেয়ে রাহেনা বেগম (৪২)

রামগড় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ববাগানটিলা নামক প্রত্যন্ত এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন জোড়া খুনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পূর্ববাগানটিলার পাহাড়ের পাদদেশে মৃত মীর হোসেনের ঘরে তার স্ত্রী আমেনা বেগম ও মেয়ে রাহেনা বেগম থাকতেন। বৃহস্পতিবার সকালে আশেপাশের লোকজন ওই বাড়িতে কারও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখেন পাশপাশি দুই কক্ষে খাটিয়ার উপর মা ও মেয়ের মরদেহ পড়ে আছে। লোকজন এ অবস্থা দেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

স্থানীয়রা জানান, সকালে ঘরের দরজা খোলাই ছিল। রাতের কোনো এক সময় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে খুনি পালিয়ে যায়। মাটির তৈরি ঘরের তিনটি কক্ষের দুটিতে মা ও মেয়ের মরদেহ পড়েছিল খাটের উপর। মশারিও টানানো ছিল। অপর কক্ষে খাটে মশারি টানানো দেখা গেলেও রাতে সেখানে কে ছিল তা জানা যায়নি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাদের জবাই করে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হওয়া না গেলেও এলাকার লোকজন ধারণা করছেন জায়গাজমির পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। তারা আরও ধারণা করছেন, এ হত্যার সাথে পরিবারের কোনো কেউ জড়িত থাকতে পারে।

নিহত আমেনা বেগমের পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। ছেলেদের মধ্যে দুই ছেলে পাকিস্তান প্রবাসী। অপর তিনজনের মধ্যে একজন রামগড়ে এবং অন্য দুইজন বারৈয়ারহাট ও ছাগলনাইয়ায় থাকে। দুই মেয়ের মধ্যে নিহত রাহেনা বেগম তার মায়ের সাথে থাকতেন। তার স্বামী ওমান প্রবাসী। একমাত্র ছেলে ঢাকায় থাকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশি বলেন, পৈতৃক জায়গা জমি নিয়ে দেশে থাকা ছেলেদের সাথে মায়ের দ্বন্দ্ব বিরোধ চলছে অনেকদিন ধরে। এ নিয়ে গ্রাম্য সালিসও হয় একাধিকবার।

এদিকে, মামেয়ের হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শামিম, রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়ইন ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন ঘটনাস্থলে যান।

ওসি জানান, মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, সিআইডির একটি টিমও ঘটনাস্থলে আসছে। লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুলে যাওয়ার পথে প্রধান শিক্ষকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা
পরবর্তী নিবন্ধএনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশে ১১ সংশোধন, শীর্ষ পদে আসবেন অভিজ্ঞরা