কর্ণফুলীতে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। রাত গভীর হলেই নুর হোসেন প্রকাশ আরিফের নেতৃত্বে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ তার বাহিনী হয়ে উঠে বেপরোয়া। গত ১৬ অক্টোবর স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে র্যাব–৭ অধিনায়ক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জানা গেছে, কর্ণফুলী থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতির ৯টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় একাধিকবার জেলে গেলেও জামিনে এসে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। নুর হোসেন কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা মাস্টার হাট বুলু মেম্বার বাড়ির মৃত আলী হোসেনের পুত্র।
র্যাব–৭ এ দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নুর হোসেন একজন ডাকাত সর্দার। তার নেতৃত্বে ডাকাত দল প্রতিদিন রাত ১০টার পর থেকে কর্ণফুলীর শাহ্ আমানতে ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেয়। তার সাঙ্গপাঙ্গরা রাতের অন্ধকারে জাহাজ থেকে নামানো তেলের ব্যারেল চুরি করে। এতে বাধা দিলে রামদা, কুড়াল, গুলি ও কিরিচসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আরো জানা যায়, তার বাহিনীতে ১৪/১৫জন সদস্য রয়েছে। নুর হোসেন প্রকাশ আরিফ দলের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘরে ডাকাতি করে, লুটপাট চালায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, নুর হোসেন এতই বেপরোয়া যে, তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। এমনকি প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগও দিতে সাহস করে না কেউ। প্রতিনিয়ত শাহ আমানত ব্রিজ এলাকায় চলন্ত গাড়ি থেকে পণ্যও লুট করে তার দল। প্রতিবাদ করলেই গাড়ির চালককে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়দের অভিযোগ এসব অপরাধ জেনেও কতিপয় পুলিশ সদস্য তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এছাড়াও নুর হোসেনের নেতৃত্বে এলাকায় বিভিন্ন মোটর রিকশা ও সিএনজি টেঙি চালকদের রয়েছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সে নিয়মিত ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
কর্ণফুলী নদীর কয়েকজন নৌকার মাঝি নাম প্রকাশ না করে বলেন, সন্ত্রাসী নুর হোসেন রাত হলেই বিভিন্ন নৌকা ও ইঞ্জিন চালিত বোট নিয়ে নদীতে নেমে বিভিন্ন বিভিন্ন নৌকা ও জাহাজ থেকে বিভিন্ন পণ্য ছিনতাই ও চুরির ঘটনা করে সটকে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, কর্ণফুলীর বিভিন্ন এলাকায় তার রয়েছে বিশাল দেশীয় অস্ত্রের ভান্ডার।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মনির হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে পূর্বের যে মামলাগুলো রয়েছে সেগুলোতে সে জামিনে আছে। নতুন করে কেউ কোনো অভিযোগ করলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।