রাতের বেলা নগরের সড়কগুলোর নিরাপত্তা বাড়াতে প্রথমবারের মতো ‘রোড স্টাড’ বা ‘কেটস আই’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর অংশ হিসেবে পোর্ট কানেকটিং রোডে পরীক্ষমূলকভাবে রোড স্টাড বসানোর কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। সেখানে সাফল্য এলে পর্যায়ক্রমে শহরের অন্যান্য সড়কেও রোড স্টাড স্থাপনের পরিকল্পনা আছে চসিকের।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রোড স্টাড হচ্ছে এক ধরনের লাইট। যেগুলো সড়কের মাঝখানে মার্ক করে দেয়া গাড়ির লেইন বরাবর স্থাপন করা হয়। এগুলো ভারী যানবাহানের চাপ সহ্য করতে পারে। সড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য অতি জরুরি রোড স্টাড মূলত রাতের বেলায় রাস্তায় নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচলে নিরাপত্তামূলক নির্দেশিকা প্রদান করবে।
জানা গেছে, রোড স্টাডের সাহায্যে গাড়ির হেড লাইটের আলোয় সড়কের মধ্যবর্তী লেইনসমূহ আলোকিত হবে। এতে রাতের বেলা সড়কের লেইন বুঝতে সহজ হবে চালকের। ফলে নির্বিঘ্নে গাড়ি চালাতে পারবেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনাও রোধ হবে। বিশেষ করে কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে এগুলো। এছাড়া নির্দিষ্ট লেইনে গাড়ি চলাচল নিশ্চিত করবে এ রোড স্টাড। যা সড়কে শৃঙ্খলা বাড়াবে। ফলে কমে আসবে যানজটও।
এ বিষয়ে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান দৈনিক আজাদীকে বলেন, সড়কে লেইন মার্কিং থাকে। এ লেইন বরাবর গাড়ি চললে যানজট কম হয়। কিন্তু রাত্রিবেলা অনেক সময় লেইন দেখা যায় না। স্থাপিত রোড স্টাডগুলো রাতের বেলা জ্বলবে। এতে লেইন দেখা যাবে। ফলে চালক তার লেইন বরাবর চলতে পারবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেশি কুয়াশা পড়লে লেইন বুঝা যায় না। আবার লোড শেডিং হলে সড়কবাতি না জ্বলার কারণেও লেইন বুঝতে সমস্যা হয়। তখন এলোমেলো গাড়ি চালাতে গিয়ে যানজট তৈরি হয়। আবার দুর্ঘটনার শঙ্কাও থাকে। রোড স্টাডের ফলে চালক বুঝতে পারবেন তিনি নিজের ট্র্যাকে আছেন। যা যানজট নিরসনের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও রোধ করবে। এ প্রকৌশলী বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে পিসি রোডে লাগাচ্ছি। এটার ভালো-মন্দ দিকগুলো আমরা খতিয়ে দেখব।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৪ সালে পার্সি শও (১৮৯০-১৯৭৬) নামে এক ইংরেজ রোড স্টাড আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি যে এলাকায় থাকতেন সেখানে কুয়াশা পড়ত বেশি। এছাড়া স্থানীয় রাস্তায় প্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটত। এসব সমস্যার সমাধান করার চিন্তা থেকে রোড স্টাড আবিষ্কার করেন তিনি। ওইসময় ‘কেটস আই’ নামে পরিচিত ছিল রোড স্টাড।
বর্তমানে উন্নত বিশ্বে রোড স্টাডের ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে তা কম দেখা যায়। অবশ্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন কিছু সড়কে এ রোড স্টাড রয়েছে। চট্টগ্রাম-কঙবাজার সড়কের চকরিয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েকটি সড়কে রয়েছে রোড স্টাড।












