ফসলি জমি থেকে শুরু করে সরকারি খাস জমি, সর্বত্র থেকে মাটি কাটার মহোৎসব চলছে আনোয়ারায়। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে সন্ধ্যা হলেই শুরু হয় মাটি কাটা, চলে ভোর সকাল পর্যন্ত। আর এসব মাটি বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছে একাধিক সিন্ডিকেট। মাটি কাটা বন্ধে উপজেলা প্রশাসনে একাধিক অভিযোগ দায়ের করলেও মাটি কাটা বন্ধে দৃশ্যত কোন অভিযান না থাকায় হতাশ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।
বর্তমানে উপজেলার জুঁইদন্ডি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মাটি কাটা চলছে। এখানে ফসলি জমির সাথে খাস জমি থেকেও মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ইউনিয়নের খুরুস্কুল গ্রামে মাটি কাটা নিয়ে স্থানীয় দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে মাটি কাটা বন্ধ হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করে এবং মাটি কাটা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামেও মাটি কাটার উৎসব চলছে। দক্ষিণ পরুয়া পাড়া এলাকায় মৌলানা আবদুল জলিল নামে একজনের মালিকানাধীন জমির মাটি রাতের আধাঁরে কেটে নিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আবদুল জলিল স্থানীয় ৪ জনের বিরুদ্ধে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গতকাল লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া বারশত ইউনিয়নের বারশত, দুধ কুমড়া, বটতলী ইউনিয়নের হুলুদের পাড়া, বরৈয়া, পশ্চিম তুলাতলী, আইরমঙ্গল, বরুমচড়া, বারখাইন, হাইলধর, পরৈকোড়া, বৈরাগসহ আনোয়ারার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে চলছে রাতের আঁধারে মাটি কাটা।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তিন ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি হচ্ছে। প্রশাসনের ‘রহস্যজনক’ ভূমিকার কারণে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। ব্যক্তিগত জায়গায় মাটি ভরাটের অনুমতি চেয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করে বাণিজ্যিকভাবে মাটি কাটা ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে মাটিখেকো সিন্ডিকেট। এক্ষেত্রে অধিকাংশ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে মাটি কাটার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হোসাইন মুহাম্মদ জানান, স্থানীয়ভাবে আমরা জানতে পেরেছি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাটি কাটা চলছে। ইতোমধ্যে গত দুই দিন আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এ ব্যাপারে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিব।