রাজনৈতিক সরকার না হলে অস্থিতিশীলতা কাটবে না

নুরকে দেখতে গিয়ে আমীর খসরু

| শুক্রবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৭:৪০ পূর্বাহ্ণ

রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত অস্থিতিশীল অবস্থা কাটবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা চাই, দেশের মানুষ তো একটা স্থিতিশীলতাবাংলাদেশটাকে তো আস্তেধীরে একটা গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে, একটা স্থিতিশীল অবস্থার মাধ্যমে সকলের জীবন যাতে নিরাপদ থাকে, এটা চায়।

ঢাকার হাতিরঝিলে মহানগর প্রজেক্টের বাসায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরকে দেখতে যান আমীর খসরু। তিনি তার চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন খসরু। তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য নূর সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন। নুরের সঙ্গে আলাপচারিতা প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি নেতা খসরু বলেন, আমরা যত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের মাধ্যমে একটা গণতান্ত্রিক দেশ পাব, যে সরকারের প্রতি জনগণের একটা সমর্থন থাকবে, যারা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী থাকবে। সরকারের শক্তি যোগায় জনগণ। তো সেটার অনুপস্থিতিতে তো ঘটনা এরকম ঘটতেই থাকবেআরো বেশি ঘটবে আগামী দিনে। খবর বিডিনিউজের।

তার মতে, রাষ্ট্রের সব অঙ্গ যাতে রাজনৈতিক শক্তির অধীনে নিয়ন্ত্রিত থাকতে পারে, সেটা একমাত্র নির্বাচিত সরকার ব্যতীত সম্ভব নয়। তা না হলে অস্থিতিশীল অবস্থা কাটবে না। জবাবদিহিতার সংকটের প্রসঙ্গ টেনে খসরু বলেন, এখানে সংসদ নাই, এখানে জবাবদিহিতার একটা অনুপস্থিতি তো আছেইএটা তো আমরা অস্বীকার করতে পারি না, এটার জন্য কাউকে দোষারোপ করে লাভ নাই। তার মতে, নির্বাচিত সরকার না থাকায় জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার অনুপস্থিতি থাকারই কথা এবং সেটা আছে।

জাতীয় নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে করার দাবিসহ পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিক্ষোভ করেছে। এ বিষয়টি সামনে রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু বলন, এটা (পিআর পদ্ধতির নির্বাচন) চাইতেই পারে, কোনো অসুবিধা নাই। আরও অন্য কিছু চাচ্ছে। আমাদেরও আবার চাওয়ার কিছু আছে। সব জায়গায় যে ঐক্যমত হয়েছে তা তো না, ঐক্যমত হওয়ারই কথা না। কারণ সবাই বিভিন্ন দল, বিভিন্ন দর্শন, বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা (আছে)। সুতরাং সব জায়গাতে ঐক্যমত হবে, এটা কেউ বিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই। তাইলে তো আলাদা আলাদা দল হইতো না। আমরা বাকশাল হয়ে যেতাম, তাই না। সুতরাং সেই চাওয়াটা অসুবিধা নাই। কিন্তু সে চাওয়াটা জনগণের কাছে যেতে হবেৃনির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সেটা পূরণ করতে হবে, আর এটাই গণতন্ত্র।

ছাত্রগণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের দেড় দশকের শাসনের ইতি ঘটার পর অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মৌলিক সংস্কারগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো বিভক্তি রয়ে গেছে। খসরু বলেন, যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, তাদের জনগণের উপর আস্থা থাকতে হবে। তাদের যে ভবিষ্যতে, তাদের যে কর্মসূচি, যে পরিবর্তন যারা আনতে চায় প্রত্যেকটি দলের, তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সেটা সংসদে আসবে, আলোচনা হবে, বিতর্ক হবে, তারপর পাস হবে এটাই গণতন্ত্রএটাতে বিশ্বাস করতে হবে। এটাতে বিশ্বাস না করলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না, এটাতে বিশ্বাস না করলে আবার একটা পরাজিত শক্তির জন্য আমরা দ্বার উন্মুক্ত করে দেব, তাদের জন্য তো আমরা স্পেস ক্রিয়েট করে দেবৃতাই না।

সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। দেশ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, এটার জন্য তো আমরা, গত ১৫/১৬ বছর এত ত্যাগ স্বীকার করেছে সবাই মিলে। নির্বাচনের সাথে কোনো পার্টির কি দাবিদাওয়া এটার কোনো সম্পর্ক নাই, তাদের দাবিদাওয়া থাকতেই পারে, সেই দাবি দেওয়া নিয়ে তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসবে, তারপর সেটা পাস করতে পারবেকোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এসব দাবির সাথে নির্বাচনের প্রক্রিয়ার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। তবে কেউ যদি এই পর্যায়ে অস্থিতিশীল করতে চায়, তাদের রাজনৈতিকভাবে এটার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবর্জ্য ফেলার জন্য কেনা হবে নতুন ল্যান্ডফিল
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, অভিযুক্ত কারাগারে