রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান চায় সুজন

পুলিশ ও বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করার সুপারিশ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২৪ at ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

নির্দলীয় ভিত্তিতে নির্বাচন, সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে জেলা পরিষদ নির্বাচন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা নিশ্চিত, রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটানো এবং বিরোধীদের দমনপীড়নের সংস্কৃতির অবসান ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। এছাড়া জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করার সুপারিশ জানিয়েছে সুজন। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টিসহ সংস্কার কমিশনের কাছে জনআকাঙ্ক্ষা ভিত্তিক সুপারিশমালা প্রণয়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংস্থাটি। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে নগরের চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সুজন চট্টগ্রাম বিভাগীয় আহ্বায়ক প্রফেসর সিকান্দার খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আখতার কবীর চৌধুরী।

লিখিত বক্তব্যে দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে নতুন নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন, নিয়োগ আইনে কমিটিতে সরকারি ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, একতৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ, ‘না’ ভোটের বিধান চালু, এবং নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ বিধিমালার সংশোধন করতে হবে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে জনপ্রশাসনকে সম্পূর্ণ দলীয়করণমুক্ত করা, কোনো দলীয় কর্মসূচিতে সরকারি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের জন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে মাজদার হোসেন মামলার রায়ের যথাযথ বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করা হয়।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণসহ দুটি বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের সাংবিধানিক আকাঙ্ক্ষার আলোকে (১১, ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ) স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য আইন প্রণয়নের প্রত্যাশা থাকলেও তা অদ্যাবধি হয়ে ওঠেনি, বাস্তবায়ন করা যায়নি প্রশাসনিক বিকেন্দ্রিকরণের চেতনা। অথচ স্থানীয় সরকারের কর্মকাণ্ডে সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের নির্বাচনগুলো নির্দলীয় ভিত্তিতে সংসদীয় পদ্ধতিতে আয়োজন, জেলা পরিষদ নির্বাচন মৌলিক গণতন্ত্রের আদলে না করে সাধারণ ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে আয়োজন, ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের জন্য আসন সংরক্ষণ এবং ক্ষমতা, দায়িত্ব ও সম্পদে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা ইত্যাদি এখন সময়ের দাবি। এ সকল দাবি পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবিলম্বে স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন করা উচিত। তিনি আরও বরেন, আমরা যত ধরনের সংস্কারের পথেই হাঁটি না কেন, যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কোনো পরিবর্তন না আনতে পারি, তবে কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না। তাই, সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বচ্ছ, গণতান্ত্রিক ও জনকল্যাণমুখী করতে হবে। এতে উপস্থিত ছিলেন সুজন, চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ এরশাদ, কোষাধ্যক্ষ মহিউদ্দিন মুকুল, সদস্য নোমান উল্লাহ বাহার, সীতাকুণ্ড উপজেলার সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন অনিক, চট্টগ্রাম এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিক্ষার্থী ২৭ হাজার, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই একজনও
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬