প্রায় দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পরিচালক মোবারক হোসেন এবং তার স্ত্রী সাহানা পারভীনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশনের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার বিকেলে মামলা দুটি করেন বলে দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান।
দুদক বলছে, মোবারক হোসেন আগে ছিলেন রাজউকের অথরাইজড অফিসার, বর্তমানে পরিচালক (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ–২)। চাকরিকালীন সময়ে বৈধ উৎস থেকে তার আয়ের পরিমাণ ৬৯ লাখ ৩৯ হাজার ২০৮ টাকা। অথচ নিজের নামে তিনি এক কোটি দশ লাখ টাকার সম্পদ গড়েছেন। আবার স্ত্রী সাহানা পারভীনের নামেও এক কোটি ৫৮ লাখ টাকার সম্পদ গড়েছেন মোবারক। তারা স্বামী–স্ত্রী মিলে প্রায় দুই কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয়বহির্ভূত’ সম্পদের মালিক বলে দুদকের ভাষ্য। খবর বিডিনিউজের।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মোবারক হোসেন দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নিজের নামে স্থাবর ও অস্থাবরসহ মোট এক কোটি ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য থাকার ঘোষণা করেন। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় করে দাখিল করা সম্পদের সত্যতা পায় দুদক। এই সম্পদের বিপরীতে চাকরিকালীন বিভিন্ন খাত থেকে আয় পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ব্যতিরেকে সঞ্চয় ও ঋণ গ্রহণসহ মোট বৈধ উৎসের পরিমাণ পাওয়া যায় ৬৯ লাখ ৩৯ হাজার ২০৮ টাকা। এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বৈধ উৎসের চেয়ে অতিরিক্ত ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৫ টাকা আয়ের কোনো বৈধ ও গ্রহণযোগ্য উৎস তিনি দেখাতে পারেননি।
মামলায় বলা হয়, আসামি মো. মোবারক হোসেন তার নিজের নামে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৫ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ভোগ দখলে রেখেছেন। মোবারক হোসেনের স্ত্রী সাহানা পারভীনের নামে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি নিজ নামে ৬০ লাখ ৯০ হাজার ৫৬০ টাকার স্থাবর, ১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭০১ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্যসহ সর্বমোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার ২৬১ টাকার সম্পদের তথ্য দাখিল করেছেন। কিন্তু ওই সময়ে সাহানা পারভীনের আয় থেকে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে, নীট সঞ্চয়সহ অন্যান্য বৈধ প্রাপ্তিসহ মোট বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৪১ লাখ ২ হাজার ১০৯ টাকা। এ ক্ষেত্রে তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৫২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ভোগ দখলে রেখেছেন বলে দুদকের ভাষ্য।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে সাহানা পারভীনের স্বামী মো. মোবারক হোসেন অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত এই সম্পদ অর্জন করেছেন। সুতরাং আসামি সাহানা পারভীন ও তার স্বামী মো. মোবারক হোসেন পরস্পর যোগসাজশে, একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে দেড় কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ভোগ দখলে রাখেন।
এ বিষয়ে মোবারক হোসেনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। এসএমএস দিলেও তার সাড়া মেলেনি।