চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের কোদালা বিটের চন্দ্রঘোনা ও দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুরের প্রায় ২১০ হেক্টর অথ্যাৎ ৫২০ একর বনভূমি নিয়ে শেখ রাসেল এভিয়ারি অ্যান্ড ইকো পার্ক স্থাপিত হয়েছে। ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে বিনোদনপ্রেমীদের জন্য রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নে কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন এই পার্কটি উদ্বোধন হয়। পার্কের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বাংলাদেশের প্রথম রোপওয়ে ক্যাবলকার যা ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ। উঁচুনিচু পাহাড়ের মাঝপথ দিয়ে বয়ে গেছে এ ক্যাবলকার। প্রতিবছর সারাদেশের অনেক পর্যটক আকর্ষণীয় এই ক্যাবলকার উপভোগে আসেন। তবে দীর্ঘ আড়াই বছর নানা কারণে বন্ধ থাকার পর এবারের ঈদে এটি চালু করার কথা ছিল। কিন্তু এবারের ঈদেও চালু করা যাচ্ছে না এই ক্যাবলকার। এতে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে এ বছরের শুরু থেকে ভারত থেকে অভিজ্ঞ ক্যাবলকার ইজ্ঞিনিয়াররা এসে ক্যাবলকার সংস্কারের কাজ করেছেন। তারা জানিয়েছে মে মাসের শেষের দিকে ক্যাবলকার চালু হতে পারে। তবে ক্যাবলকার বন্ধ থাকলেও বিনোদন প্রেমিদের আনন্দ দিতে আরও ব্যাপক আয়োজন রয়েছে বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।
পার্ক সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যটকরা ক্যাবলকার ছাড়া পার্কের নয়নাভিরাম নানা আর্কষণীয় ইভেন্ট উপভোগ করতে পারবেন। পার্কজুড়ে সুবিশাল খাঁচায় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, প্রবেশ দ্বারে কৃত্রিম লেকে হাঁস ও নানা জাতের জলচর পাখি ও লেকের মাঝখানে দ্বীপের সাথে সংযোগ সেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানা আকর্ষণীয় ইভেন্টের কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের বিনোদনের জন্য শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ক ইতোমধ্যেই অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। ঈদ উপলক্ষে পর্যটক ও বিনোদনপ্রেমীদের জন্য বৃক্ষাচ্ছাদিত সবুজ বাগান আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাহিদ হাসান বলেন, বর্তমানে পার্কটির ১২০০ মিটারের রোপওয়ে (ক্যাবল কার) ইভেন্টটি বন্ধ রয়েছে গত আড়াই বছর ধরে। এটি সংস্কারের জন্যে আলাদাভাবে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ক্যাবলকার নতুনভাবে নবরূপে চালুর জন্য ভারত থেকে ক্যাবলকার ইঞ্জিনিয়াররা বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সবুজ পাহাড় ও কৃত্রিম হ্রদের উপর দিয়ে আরো এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ক্যাবল কার যোগ করার কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে ক্যাবল কারে চড়ে পার্কের একদিক থেকে উঠে পুরো পার্ক প্রদক্ষিণ করে অন্যদিকে এসে নামতে পারবেন। সংস্কার কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। আশাকরি আগামী মে মাসে ক্যাবল কার পুনরায় চালু করা যাবে।
তিনি জানান, পার্কে চিল্ড্রেন কর্নার নির্মাণ, ওয়াচিং টাওয়ার স্থাপন, বার্ড গ্যালারি স্থাপন, লেক নির্মাণ, সীমানা দেয়াল নির্মাণসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্ককে আকর্ষণীয় বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।