রাঙ্গুনিয়ায় বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্য দিয়ে শেষ হলো ভোটগ্রহণ

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | রবিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৬ অপরাহ্ণ

কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন সহিংসতার মধ্য দিয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কোনো ঝামেলা না হলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে।

আজ রবিবার (২৮ নভেম্বর) উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড রাজানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে প্রায় দেড় ঘন্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওই কেন্দ্রের সদস্য প্রার্থী আজিম উদ্দিন ও ইউনুস মিয়া লেদ’র সমর্থকদের মধ্যে এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে দুপুর পৌনে দুইটা থেকে প্রায় দেড় ঘন্টা ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে গিয়ে পুনরায় ভোটগ্রহণ স্বাভাবিক করে বলে জানা যায়।

একইভাবে দক্ষিণ রাজানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। লালানগর আলমশাহ পাড়া কেন্দ্রেও ধাওয়া-পালটা ধাওয়া হয়। চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চললেও পরবর্তীতে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে।

এই ওয়ার্ডের প্রার্থী আবুল হক অভিযোগ করেন, তার ছেলে মো. আরফাতকে প্রতিপক্ষ প্রার্থী হারুনের এক সমর্থক ছুরিকাঘাত করেছে। সে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বলে জানান তিনি।

তবে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিল্কী বলেন, “কোথাও ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল না। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। দক্ষিণ রাজানগরের একটি কেন্দ্রে দুই প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”

রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ৬নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে একজন বয়স্ক ভোটার হুইলচেয়ারে বসে কেন্দ্রে আসছেন ভোট দেয়ার জন্য

তৃতীয় ধাপের এই নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়ার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়৷ ভোটে ৮ চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনাভোটে আগাম নির্বাচিত হওয়ায় চেয়ারম্যান পদে বেতাগী, হোসনাবাদ, লালানগর, দক্ষিণ রাজানগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ করা হয়।

সকালের দিকে বেতাগী ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। কেন্দ্রের ভেতর সাধারণ ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছে।

কেন্দ্রের ভেতর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নূর কুতুবুল আলমের পাশাপাশি আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আলমের নির্বাচনী এজেন্ট দেখা গেছে। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।

হোসনাবাদ ইউনিয়নে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী দানু মিয়ার নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী এজেন্ট থাকলেও কোনো কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থী মির্জা জসিম উদ্দিনের এজেন্ট দেখা যায়নি। এই ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে ছিল ভোটারদের দীর্ঘ লাইন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে কেন্দ্রের ভেতর হাঁটাহাঁটি করতে দেখা গেছে।

এই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড কোদালা বিট অফিস কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সকাল পৌনে ১০টা পর্যন্ত কেন্দ্রের ৬৪৪টি ভোটের মধ্যে ১৫০টি সংগ্রহ হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম। তবে এই কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট থাকলেও আনারসের কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি।

১১টার দিকে দক্ষিণ নিশ্চিন্তাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মোট ১,৮২২ ভোটের মধ্যে ৫টি বুথে সংগ্রহ হয়েছে ৬০০ ভোট। এই কেন্দ্রেও আনারসের কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি।

মির্জা এমদাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, মোট ১,৩২১ ভোটের মধ্যে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সংগ্রহ হয় সাড়ে ৫০০ ভোট। প্রিজাইডিং অফিসার বিশ্বজিৎ রায় চৌধুরী এই তথ্য জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে পল্লী বিদ্যুতের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীর ১৩ ইউপিতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন