রাঙ্গুনিয়ায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। সারাদেশে লকডাউনের কারণে এবারও ধান কাটার শ্রমিক না আসায় কৃষক তাদের পাকা বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। উচ্চ মজুরি দিয়েও তারা শ্রমিক পাচ্ছেন না। এমতাবস্থায় চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কৃষকের কপালে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ধান কাটা শুরু হলেও শ্রমিক সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার চট্টগ্রামের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত গুমাই বিলসহ উপজেলায় ৫ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর ৭ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। শুধুমাত্র গুমাইবিলেই আবাদ হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ধানক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, শত শত একর জমির ধান পাকা শুরু হয়েছে। প্রতিবছর ধান কাটা মৌসুমে সাপ্তাহিক বাজারগুলোতেও ব্যাপক শ্রমিক সমাগম হতো। তবে এবার অনেকটা শ্রমিকশূন্য এসব বাজারে। যে কয়েকজন শ্রমিক এসেছেন তারাও অতিরিক্ত দাম হাকাচ্ছেন। শ্রমিক আনতে গিয়ে অনেক কৃষক খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন। রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজারহাট বাজারে শ্রম বাজারের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গরমের মধ্যে ফসলি মাঠে কাজ করা কষ্ট। মাঠে ৫-৬ দিন কাজ করলে গরম লেগে তিন-চার দিন বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। এ কারণে ৭শ-১ হাজার টাকার নিচে ধান কাটার কাজ করা সম্ভব না।
গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠজুড়ে পাকা সোনালী ধানের ম ম গন্ধ। পাকা ও আধা পাকা ধানের শীষ দুলছে বাতাসে। তবে চিন্তার ভাজ কৃষকের কপালে। পুরো ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে কৃষকরা এখন সেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত।
কৃষক মানিক উদ্দিন জানান, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন এ বছর। শ্রমিক সংকটের কারণে এখনও ধান কাটতে পারেননি। আমীর হোসেন জানান, তিনি এবার সাত বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। প্রায় জমির ধানই পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে চিন্তায় আছেন। পরান মিয়া বলেন, ধান কাটার শ্রমিক আনতে রোয়াজারহাট গিয়েছিলাম। যেখানে আগে কয়েকশ শ্রমিক সমাগম হতো, সেখানে এসেছে মাত্র ১০/২০ জন শ্রমিক। তারাও অতিরিক্ত মজুরি চাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার জানান, গতবার ধানের দাম বেশি হওয়ায় বোরো ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। শ্রমিক সংকটে কৃষকরা ধান কাটা নিয়ে কষ্টে আছেন বলে তিনি জানান।