রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহারসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। দীর্ঘ এক দশক পর গ্রুপিং পরিহার করে রাঙ্গুনিয়ায় ধানের শীষের প্রতীককে বিজয়ী করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন নেতৃবৃন্দ। গতকাল বুধবার বিকালে রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা অডিটোরিয়ামে এই উপলক্ষে তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সাথে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর আনুষ্ঠানিক পরিচয় করিয়ে দেন অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে নির্দেশনা দিয়েছেন তার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ঢাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সভায় তারেক রহমান সাহেবের আবেগঘন বক্তব্য শুনে আমরা ওয়াদা করেছিলাম দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে কাজ করব। আজ আমি কথা রেখেছি। দীর্ঘ ৪০ বছর আমি এই রাঙ্গুনিয়ায় জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে জড়িত। আমরা সকলেই ধানের শীষের কর্মী। আজকে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিয়ে যদি ইউনুস চৌধুরীকেও মনোনয়ন দিত, তবে ধানের শীষের পক্ষে তার জন্য কাজ করতাম। কারণ ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি গ্রুপ দেখিনি। গত ফ্যাসিস্ট আমলে বিএনপি করে যারা হামলা–মামলার শিকার হয়েছেন তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। তাই তাদেরকে মূল্যায়ন করার জন্য আমি হুম্মাম কাদের চৌধুরীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। ৫ আগস্টের পর দলের নাম ভাঙিয়ে অনেকেই নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে, দলের ভোট কমাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রেখে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির যে সদস্যগুলোর দেখাশোনা এতদিন অধ্যাপক কুতুব উদ্দিন বাহার চাচা করে গিয়েছেন, আজ থেকে তাদের সম্মান দেয়া এবং মূল্যায়ন করার দায়িত্ব আমি নিলাম। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপি দুই ভাগ হওয়ার সুযোগে হাইব্রিডরা বহুত ফায়দা লুটেছে। আমাকে বলে আমি কুতুব বাহারের সাথে কাজ করি, উনাকে বলে আমার সাথে কাজ করে। এই দুইভাগের মাঝখান দিয়ে বহু মানুষ বালি চুরি, মাদক ব্যবসায়, চাঁদাবাজি, জমি দখলের ব্যবসায় বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে। আজকে চাচা–ভাতিজা মিলে ওয়াদা করছি, হাইব্রিডদের দিন শেষ। আজকে থেকে আমরা–তোমরা বলতে কিছু নেই, যাদের বুকের ভেতর ধানের শীষ আছে, বেগম খালেদা জিয়াকে ভালবাসেন, তারেক রহমান সাহেবকে নেতা মানেন, আমরা সবাই এক পরিবার।
তিনি বলেন, এই বিএনপি পরিবারের শক্তি কত তা জুলাই আন্দোলনে প্রমাণিত হয়েছে। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আওয়ামী লীগ থাকবে না। সত্যিই তাদের চলে যেতে হয়েছে। আমরা সকলে যদি এক থাকি, তাহলে আমাদের কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। এভাবে যদি আমরা এক থাকতাম, হয়ত রাঙ্গুনিয়া থেকে হাছান মাহমুদকেও বহু আগে এলাকা ছাড়া হতে হতো। সকলকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করবো ইনশাআল্লাহ।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তরজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী, উত্তরজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য অধ্যাপক আজম খান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নবাব মিয়া চেয়ারম্যানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এদিন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক।












