রাঙ্গুনিয়ায় হেফাজতের হামলায় আওয়ামী লীগ কর্মী মো. মুহিবুল্লাহ (৫৪) খুনের ঘটনায় দায়ের দুই মামলায় বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দু’জনসহ এখন পর্যন্ত মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মামলা দু’টিতে বিএনপি-জামায়াতের কর্মী ও হেফাজত সমর্থক ৬৪জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০জনসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই উপজেলা বিএনপি নেতা ইউনুছ মনিকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। বুধবার তার নামাজে জানাজায় উপস্থিত হয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় নিহত মুহিবুল্লাহর খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা। এছাড়া ফেসবুক বার্তায় আওয়ামী লীগ কর্মী মুহিবুল্লাহর অকাল মৃত্যুতে দায়ীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি বিধানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সমপ্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সেইসাথে মন্ত্রী প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে দুই মামলায় বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দু’জনসহ গ্রেপ্তার ৬ জন হলেন- কোদালা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোরবান আলীর ছেলে ফোরকান আলী (৩০), ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জাকারিয়ার ছেলে মো. ইয়াহিয়া (২৪), ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলাম আহম্মদ ওরফে এছাল আহমদের ছেলে মো. ইব্রাহীম ওরফে মানিক (২৮), ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইলিয়াছের ছেলে মো. জুনায়েদ (২০), একই ওয়ার্ডের মো. ইউসুফের ছেলে মো. ইব্রাহীম (২০) এবং শিলক ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড মিনাগাজীর টিলা এলাকার আজিজুল হক তালুকদারের ছেলে বাবর আলম (৩৯)। তারা সবাই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে স্থানীয়রা নারীসহ ঘেরাওয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজত নেতাকর্মীরা। মিছিল থেকে লাঠিসোটা নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় যুবলীগ নেতা আবদুল জব্বার, দিলদার আজম লিটন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর ওপর। আওয়ামী লীগ কর্মী মুহিবুল্লাহর মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়। পরে আহত অবস্থায় তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার বলেন, আমরা নিজস্ব তদন্ত দল গঠন করে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, মারধরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। এজাহারনামীয় ৬ আসামিকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।