দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার চার ইউনিয়নের প্রবেশমুখ উপজেলার গোডাউন দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে লাখ লাখ মানুষ। এছাড়া কাপ্তাই সড়কের নিয়মিত যাত্রীতো রয়েছেই। ব্যস্ততম এই স্টেশনে এলে নিশ্চিত যানজটে আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। দিন দিন এই যানজট প্রকট আকার ধারণ করছে। শুধু এই স্টেশনেই নয়, একইভাবে শান্তিরহাট, গোচরা, রোয়াজারহাট, মরিয়মনগর চৌমুহনী, লিচুবাগানেও প্রতিদিন যানজটে কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ মানুষ।
যানজটের কারণ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে যাত্রী উঠানামা করানো, বিশৃঙ্খল সিএনজি ট্যাক্সি স্টেশন এবং অদক্ষ চালকের ট্রাফিক নিয়ম না মানা। এছাড়া ব্যস্ততম এই স্টেশনে সড়কের উপর বাস দাঁড় করিয়ে কাউন্টার থেকে যাত্রী ওঠানামাও করা হয়। যা যানজটের অন্যতম একটি কারণ। এর বাইরে সবচেয়ে বড় কারণ হলো সড়ক কেন্দ্রিক বাজার। সড়কের পাশে ফুটপাত দখল করে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই বাজার বসে এসব স্টেশনে। এমনকি দুয়েকটি ছাড়া কোনো বাজারেরই নিজস্ব কোনো জায়গা নেই। সড়ক দখল করেই বসে এই বাজারগুলো। এতে সড়কে যানজট আর পিছু ছাড়ছে না। তার উপর বিশৃঙ্খল এসব স্টেশনে শৃঙ্খলা ফেরাতে দায়িত্বশীলদের নেই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা, নেই কোনো তৎপরতা।
মো. রফিক উদ্দিন নামে এক যাত্রী জানান, শুধু সড়ক কেন্দ্রিক বাজারই নয়, যানজটের সবচেয়ে বড় কারণ হল সড়ক কেন্দ্রিক বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা। যেগুলোর কারণে ব্যস্ততম এসব স্টেশনের জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে। ফলে মুষ্টিমেয় অবৈধ স্থাপনার কতিপয় ব্যক্তির লাভের জন্য প্রতিদিন কষ্ট পাচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এগুলো উচ্ছেদ করা গেলে সড়কের প্রশস্ততা বাড়বে এবং কমবে সড়কের উপর গাড়ির চাপ। লাঘব হবে যানজট।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার চার ইউনিয়নের মিলনস্থল গোডাউনে সরেজমিনে দেখা যায়, গোডাউনে গাড়ির যানজট একদিকে ভোবানিমিল এবং অন্যদিকে সিএনজি গ্যাস পাম্প পর্যন্ত ছাড়িয়েছে। সন্ধ্যার পর তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে ছিলেন যাত্রীরা। এটি কোনোভাবে কাটিয়ে রোয়াজারহাটের দিকে এলে প্রবেশমুখ থেকেই সড়কে যানজটের একইচিত্র দেখা যায়। সড়কের একদিকে ঘাটচেক রাস্তার মাথা থেকে যানজট শুরু করে অন্যপাশে তা থানাসদর এলাকা ছাড়িয়েছে। রোয়াজারহাটের সাপ্তাহিক বাজারের দিনগুলোতে সড়কের এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিত্য ঘটনা বলে জানান যাত্রী ও চালকরা। এই বাজারেও সড়ক সংকোচন করে একাধিক সিএনজি ট্যাক্সি স্টেশন, সড়কের উপর সারি সারি করে দাঁড় করে রাখা অবৈধ ব্যাটারি রিকশা এবং যত্রতত্র গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
সুমন দাশ নামে এক চালক জানান, এসব স্টেশনে গাড়ির চাপের চাইতে জায়গা অনেক কম। অথচ সওজ‘র মালিকানাধীন পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে প্রতিটি স্টেশনে। ওই জায়গাগুলো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে সড়ক সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। যেগুলো উচ্ছেদ করে সড়ক প্রশস্থ করা গেলে যানজট আর থাকবে না।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুব জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এসব বাস্তবায়ন করতে শীঘ্রই মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করা হবে।