রাঙ্গুনিয়ায় মোহাম্মদ নাছের (৩৫) নামের এক লেবু ব্যবসায়ীর পথরোধ করে এক হাতের কনুই থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করল দুর্বৃত্তরা। এসময় তার কাছ থেকে নগদ ১ লাখ টাকা এবং তার গাড়ি চালকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা। উপজেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার বড়খোলাপাড়া মনজারটিলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গতকাল এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি, এমনকি কাটা হাতটিও উদ্ধার হয়নি। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বজনরা।
নাছের উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড নারিশ্চা চৌকিদার পাড়া এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে। তার বড়খোলাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় লেবু বাগান রয়েছে, পাশাপাশি স্থানীয় বাজার থেকে লেবু সংগ্রহ করে ট্রাকে করে ঢাকা–চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাটে পাইকারি দরে বেচাবিক্রি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একটি সিএনজি টেক্সি করে বড়খোলাপাড়া নিজের লেবু বাগানে যাচ্ছিলেন নাছের। যাওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে লেবু কেনার জন্য নগদ ১ লাখ টাকা নিয়ে যান। পথে বড়খোলাপাড়ার আগে মনজারটিলা এলাকায় এলে হঠাৎ সংঘবদ্ধ ৫–৬ জন মুখোশধারী ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে তাকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার বাম হাত কনুই থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে টাকাগুলো ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর বড় বোন ইসমত আরা জানান, আহত নাছের ৯ বোনের একমাত্র ভাই। ব্যবসা করে জীবন নির্বাহ করেন। এক সপ্তাহ আগে নাছের লেবু বোঝাই একটা ট্রাক ঢাকা পাইকারি বাজারে পাঠাচ্ছিল। যেখানে ৫ লক্ষাধিক টাকার লেবু ছিল। যাওয়ার পথে ড্রাইভারসহ গাড়িটি নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ জসিম নামে একজনকে ধরে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এই ঘটনার জেরে সন্ত্রাসীরা নাছেরের উপর পরিকল্পিত এই হামলা করেছে বলে ধারণা করছেন তারা।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে বোন ইসমত আরা আরও বলেন, অপারেশনের পর চিকিৎসক বলেছে তার হাতে তিনটি কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া মাথাসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সম্ভবত গাছের সাথে লাগিয়ে হাতটা কাটা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থলে যায়। তারা অনেক খুঁজেও কেটে নেওয়া হাতটি উদ্ধার করতে পারেননি।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। তবে কাটা হাত উদ্ধার হয়নি। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।