ডেঙ্গুর আশঙ্কা না থাকলেও পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে চোখ রাঙাচ্ছে ম্যালেরিয়া। ভারতের মিজোরাম ও ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী রাঙামাটি জেলার ৪টি উপজেলা জুরাছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়িতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এর মধ্যে জুরাছড়ি উপজেলা রয়েছে ম্যালেরিয়ার হটস্পটে। গত জুন মাসেই এই উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৭। তবে, আশার কথা হচ্ছে কোনো মৃত্যু নেই।
রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন অফিসের ম্যালেরিয়া রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, গত শেষ ৬ মাসে রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২১ জন। এর মধ্যে শুধু জুন মাসে শীর্ষে থাকা জুরাছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৭ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাঘাইছড়িতে ১৩৩ জন, এরপর বরকলে ১২৩ ও বিলাইছড়ি ১০৯। জেলার অন্য উপজেলাগুলোতে তুলনামূলক কম আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গত মাসে ৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত বর্ষা শুরুর আগে, বর্ষার সময় এবং বর্ষার পরে জুন মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা যায়। রাঙামাটি জেলার ৪টি উপজেলা ভারত সীমান্তবর্তী ও যোগাযোগ দুগর্মতার কারণে স্থানীয়দের চিকিৎসা নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙগুলো নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। সরকার এবছর জেলার ১০ উপজেলায় এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতায় ৩ লাখ ৫০ হাজার মশারি বিতরণ করেছে। এদিকে, রাঙামাটিতে ২০২২ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ছিল ৩২১৯ জন।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নিহার রঞ্জন নন্দী বলেন, বর্ষাকালে ম্যালেরিয়া প্রকোপ থাকবেই। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। তবে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। নিজেদের আশপাশের জায়গাগুলো পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রতিটি উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের টিম কাজ করছে। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র মজুদ রয়েছে। ম্যালেরিয়া আক্রান্ত এলাকাগুলো গুরুত্বের সাথে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি জানান, গত এক বছরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় কারও মৃত্যু হয়নি।