নিম্নচাপের প্রভাবে কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ পরিস্থিতিতে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন। রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, রাঙামাটি সদর উপজেলাধীন পৌর এলাকায় পাহাড় ধসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হল চম্পানিরমার টিলা, চেঙ্গীর মুখ, আব্দুল আলী একাডেমি সংলগ্ন ঢাল, মাতৃমঙ্গল, কাঠালতলী মসজিদ কলোনি, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন ঢাল, আলম ডকইয়ার্ড, গর্জনতলী মুখ, পুলিশ লাইন স্কুল সংলগ্ন ঢাল, অফিসার্স কলোনি, এডিসি হিল সংলগ্ন রাস্তার ঢাল, ওয়াপদা কলোনির বিএডিসি পাহাড়ের ঢাল, দুদক অফিসের ঢাল, দেওয়ানপাড়া পাহাড়ের ঢাল, স্বর্ণটিলা পাহাড়ের ঢাল।
এছাড়া রাজমনি পাড়া পাহাড়ের ঢাল, মুসলিম পাড়া পাহাড়ের ঢাল, পোস্ট অফিস কলোনি পাহাড়ের ঢাল, চম্পকনগর পাহাড়ের ঢাল, গৌধুলী আমানতবাগ স্কুলের পাহাড়ের ঢাল, কাদের ম্যানশন এলাকা, নতুন পাড়া পাহাড়ের ঢাল, আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, উলুছড়া, শিমুলতলী, রূপনগর ও লোকমন্দির এলাকা। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ২৯টি এলাকায় কত পরিবার বা জনসংখ্যা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি প্রশাসন।
এরমধ্যে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ভেদভেদী লোকনাথ এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় পরিদর্শন করেন জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, আমাদের আগেই থেকে সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। কোনোভাবেই যেন একটি প্রাণও না হারায়, সেটিই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। আমরা ইতোমধ্যে জেলার দশ উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে বৈঠক করেছি। রাঙামাটিতেও মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
এদিকে, গত বুধবার থেকে রাঙামাটিতে থেমে থেমে ভারী ও মাঝারি বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ছোট–ছোট পাহাড়ের ধসের খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার জেলা শহরের ভেদভেদী যুব উন্নয়ন এলাকায় একটি পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রাঙামাটি জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৮৮ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।