রাঙামাটি শহরে লাইন বন্ধ না করে ১১ কেভি লাইনবাহী বৈদ্যুতিক পোল অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে গুরুতর আহত শ্রমিক মারা গেছে। শহরের দেবাশীষনগর এলাকায় সংঘটিত এই ঘটনায় নিহত শ্রমিকের নাম বাপ্পী (২৮)। সে শহরের মোল্লা পাড়ার বাসিন্দা এবং চার বছর বয়সী এক সন্তানের জনক। এ ঘটনায় এলাকাবাসী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছে, রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদারের মাধ্যমে বাপ্পী ও তার পিতাসহ আরো কয়েকজন শ্রমিক দেবাশীষ নগর এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে নেওয়ার কাজে যায়। এসময় ৩০ ফুট খুঁটির উপরে উঠে ১১ হাজার কেভির তারে হুক মারার সাথে সাথেই বাপ্পীর দুই হাত বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ঝলসে ৩০ ফুট নীচে পড়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাথে সাথেই তাকে চট্টগ্রাম রেফার করে দেওয়া হয়। সেখানে আইসিইওতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত নয়টার সময় বাপ্পী মারা যায় বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে বাপ্পীর সাথে কাজ করা অন্যান্য শ্রমিক ও পিডিবির সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, কাজের তদারকি ও ঘটনাস্থলের দায়িত্বে ছিলেন রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরশাদ আলী। বাপ্পী কাজ শুরুর সময় ফিডারের দায়িত্বে থাকা এরশাদ নিজেই জানিয়েছিলেন, ১১ কেভির মেইন লাইন বন্ধ রয়েছে। কিন্তু মূলতঃ চেক না করেই তিনি লাইন বন্ধ রয়েছে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছে নিহত বাপ্পীর স্বজনরা। এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী এরশাদ আলীর বক্তব্য জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, মূলতঃ শার্টডাউন না করে কাজটি করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই কাজটির কোনো ওয়ার্ক অর্ডার ছিল না। তবে অফিসের ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মৌখিক নির্দেশনানুসারে কাজটি করানো হচ্ছিল। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তির জন্য আমাদের পক্ষ থেকে যেটুকু সহযোগিতা করার করবো। এদিকে এই ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতেই স্থানীয় শতাধিক এলাকাবাসী বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। এসময় নিহত বাপ্পীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগও করেন বিক্ষুব্ধরা। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্বজনরা। সর্বশেষ রাত সাড়ে ১১ টার সময়েও বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে রাখতে দেখা গেছে বিক্ষুব্ধদের।